করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসচেতনাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এজন্য বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ আদেশ না মানলে জেল-জরিমানারও বিধান রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে আদেশ না মানায় অনেককে জরিমানা করা হয়েছে। দেশ-জাতির স্বার্থে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন চারজন। আজ শনিবার দুপুরে এক ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ তথ্য জানান।
নতুন করে একজনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো দুইজনে। এ ছাড়া নতুন চারজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৪ জনে। এদের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
দেশে করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে বেশ কটি মন্ত্রণালয় নিয়ে ব্রিফ করেছি। সতর্কতা মেনে চলছে না। কঠোরতা নেয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মেসেজ (বার্তা) দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম না মানলে ব্যবস্থা নেবে আইনশৃংখলা বাহিনী। সতর্কতার পত্র পাঠানো হয়েছে।’
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া নোভেল করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পাঁচ ধরনের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এগুলো হচ্ছে- এক. ভালোভাবে সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া। দুই. হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ ও নাক স্পর্শ না করা। তিন. হাঁচি–কাশি দেওয়ার সময় মুখ ঢেকে রাখা। চার. অসুস্থ পশু বা পাখির সংস্পর্শে না আসা। এবং পাঁচ. মাছ, মাংস ভালোভাবে রান্না করে খাওয়া।
করোনাভাইরাস যাতে না ছড়ায় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সাধারণত তিন রকমভাবে এই ভাইরাস ছড়ায়। এগুলো হচ্ছে- এক. আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি–কাশির মাধ্যমে। দুই. আক্রান্ত ব্যক্তিকে স্পর্শ করলে ছড়ায় তিন. পশু, পাখি বা গবাদিপশুর মাধ্যমে ছড়ায়।
করোনা একধরনের সংক্রামক ভাইরাস। ভাইরাসটি পশু-পাখি থেকে সংক্রমিত হয়ে থাকে। চীনসহ পৃথিবীর শতাধিক দেশে বর্তমানে (মার্স ও সার্স সমগোত্রীয় করোনাভাইরাস) এর সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কেউ যদি এসব দেশ ভ্রমণ করে থাকেন এবং ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে, গলাব্যথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তাহলে তার করোনাভাইরাসে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। তাকে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে আইইডিসিআরের নিচের নম্বরে যোগাযোগ করতে বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫।
সচেতনতাই পারে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। গুজবে কান দেয়া যাবেনা। করোনার প্রভাবে মাস্কের দাম বেড়ে গেছে। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন অযথা মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই। করোনাভাইরাসের আক্রমণের সুযোগে কোনো অবস্থায়ই জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোসহ অন্যান্য জনবিরোধী কাজ করা যাবেনা। আমরা চাই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ এই সংকট কাটিয়ে উঠুক।