দিনাজপুর প্রতিনিধি:
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে একটি কঠিন সময় পার করছে, আমরা একটি ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছি। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একবার গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিলো, আবারও ক্ষমতায় এসে এক যুগ ধরে তারা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংশ করে একটি স্বৈরাচার রাষ্ট্রে পরিনত করেছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের সুসংগঠিত আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার ঘোষনা দেন তিনি। এ জন্য তরুণদের এগিয়ে আসার আহŸান জানান মির্জা ফখরুল।
শনিবার (১৪ মে) দুপুরে দিনাজপুর ইনষ্টিটিউট প্রাঙ্গনে জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবী করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে সবার অংশগ্রহনে একটি গ্রহনযোগ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষনা দেন তিনি। তিনি আবারও ঘোষনা দেন-দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।
মির্জা ফখরুল সারাদেশে হত্যা, খুন, রাহাজানীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই স্বীকার করে বলেছেন যে সমস্ত নেতারা হাজার হাজার টাকা লুট করে পাচার করেছেন-তাদের আওয়ামীলীগে জায়গা হবে না। এই বক্তব্যের মাধ্যমে ওবায়দুল কাদেররা স্বীকার করে নিয়েছেন-যে আপনারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন। ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন-আপনারা নির্যাতন করছেন, খুন করছেন, গুম করছেন। তার প্রমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে-দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যে বিচার, সেই বিচার রাজনৈতিক বিচার হয়েছে, তাকে যে কারাগারে দেয়া হয়েছে-সেটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এরা বিচার বিভাগকে ধ্বংশ করেছে, প্রশাসনকে ধ্বংশ করেছে, সংবাদ মাধ্যমকে দলীয়করণ করেছে, সমস্ত দেশকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দেশকে ধ্বংশের দিকে নিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ এখন বিএনপি’র দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাই দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করেই দায়িত্বশীল দল হিসেবে বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলে এই জালিম সরকারের পতন ঘটাতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। যেই বাংলাদেশে এই ধরনের নিপীড়ন থাকবে না-নির্যাতন থাকবে না-যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে-তার চর্চা থাকবে।
দিনাজপুর জেল বিএনপি’ আহŸায়ক সাবেক এমপি রেজিনা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপি.র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যকরী সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এজেএম জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আব্দুল খালেক, এজেডএম রেজওয়ানুল হক, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আক্তারুজ্জামান মিয়া প্রমুখ।
এর আগে কাউন্সিলে লন্ডন থেকে ভাচুয়ালী যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক রহমান।
দ্বিতীয় অধিবেশনে দিনাজপুর জেলা বিএনপি’র কাউন্সিল শুরু হয়। এই কাউন্সিলে জেলার ১ হাজার ৯১৯ জন কাউন্সিলের ভোটে নির্বাচিত হবে সভাপতি, সাধারন সম্পাদকসহ ৭টি পদে ৯ জন নেতা। এতে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন ১৬ জন।