দিনাজপুর শহরের একটি বাড়ী থেকে কেয়ারটেকারের ঝুলন্ত ও তার স্ত্রী’র রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-13 13:03:21

 

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দিনাজপুর শহরের একটি বাড়ী কেয়ারটেকার মজিবর রহমান (৬৫) ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম (৪৫) এর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মজিবর রহমানের লাশ উদ্ধার করা হয় শয়ন কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এবং সুরাইয়া বেগমের রক্তমাখা লাশ উদ্ধার করা হয় রান্নাঘরে পড়ে থাকা অবস্থায়।

দিনাজপুর শহরের লিলির মোড় এলাকায় ‘ফাতেমা বিথি’ নামে একটি বাসভবন থেকে শুক্রবার সকাল ৯টায় তাদের লাশ উদ্ধার করে কোতয়ালী পুলিশ। মজিবর দম্পত্তির বাড়ী দিনাজপুর শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা এলাকায়। বাড়ীর মালিক এ্যাডভোকেট নিলুফার রহিম ঢাকায় অবস্থান করায় প্রায় ১৫ বছর ধরে ওই বাড়ীর কেয়ারটেকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতো মজিবর রহমান। আর তার সাথে থাকতো স্ত্রী সুরাইয়া বেগম।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় বাড়ীর মালিক এ্যাডভোকেট নিলুফার রহিম কেয়ারটেকার মজিবর রহমানকে ফোনে না পেয়ে বাড়ী সংলগ্ন মার্কেটের নৈশ্যপ্রহরী শফিকুল ইসলামকে ফোন করে। পরে শফিকুল বাড়ীর দরজা লাগানো দেখে দেয়াল টপকে বাড়ীর ভেতরে প্রবেশ করে রান্না ঘরে দেখে সুরাইয়া বেগমের রক্তাক্ত (মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত) মরদেহ এবং তার স্বামী মজিবর রহমানকে শয়নকক্ষে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। নৈশ্যপ্রহরী শফিকুল বিষয়টি স্থানীয় ও পুলিশকে জানালে কোতয়ালী পুলিশ শুক্রবার ভোরেই বাড়ীটি ঘিরে ফেলে এবং তদন্ত শুরু করে। এরপর সকাল ৯টায় মজিবর রহমান ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে পুলিশ। 

মজিবর দম্পত্তির একমাত্র সন্তান অটোবাইক চালক সিরাজুল ইসলাম জানান, তার বাবা-মা ১৫ বছর থেকে ওই বাড়ীতে অবস্থান করছিলো। গত ৭ দিন বাবা-মা’র সাথে কোন কথা হয়নি। রাতে বাড়ীর মালিকের ফোন পেয়ে এসে তিনি দেখেন বাবা-মা’র লাশ। সিরাজুল ইসলাম জানান, তার জানামতে তার বাবা-মা’র সাথে কারও কোন বিরোধ ছিলো না। কিভাবে এই ঘটনা ঘটলো, তা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবী জানায় সিরাজুল।

এই ঘটনার পর কোতয়ালী পুলিশের পাশাপাশি দিনাজপুর জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মমিনুল করিম জানান, রাত সাড়ে ১২টায় ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কোতয়ালী পুলিশ। পুলিশ এসে মজিবর রহমানের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় এবং স্ত্রী সুরাইয়া বেগমের রক্তাক্ত লাশ রান্নাঘরে পড়ে থাকা অবস্থায় পায়। কোতয়ালী পুলিশের পাশাপাশি শুক্রবার সকালে সিআইডি ও পিবিআই-এর বিশেষজ্ঞ টিম এসে বাড়ীটি ঘিরে রাখে এবং ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। প্রকৃত রহস্য অচিরেই খুঁজে বের করা হবে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোতয়ালী থানায় এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছিলো। এই ঘটনায় এ পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।