বন্ধুর চিকিৎসার নামে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাত কারীদের বিরুদ্ধে মামলা

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-28 00:50:15

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বন্ধুর চিকিৎসার নাম করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে রংপুরের তাজহাট থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের মামলা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমন জানান, গত বছর জুন মাসের ২০ তারিখে রংপুরের কাউনিয়াতে মোটরসাইকেল যোগে বাড়িতে আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় তার বাবা নিহত হয় এবং একই দুর্ঘটনায় সে মারাত্মকভাবে আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়। এই সুযোগে পরিচিত সহপাঠীরা টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কৌশলে পরিবারের কাছ থেকে তার চিকিৎসায় ব্যবহৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট ও তার দুর্ঘটনার সময় তোলা বিভিন্ন ছবি ব্যবহার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের নিজস্ব নগদ ও বিকাশ নাম্বার ব্যবহার করে টাকা সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে রংপুর শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, রাস্তা-ঘাট, নগরীর অলিগলিতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দুর্ঘটনার ছবি এবং মেডিকেল রিপোর্ট দিয়ে ব্যানার ফেস্টুনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

লিমন জানান, চিকিৎসায় তার একটি পা কেটে ফেলতে হয়, ফলে তখন তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি। পরে চিকিৎসা শেষে ঢাকা থেকে ফেরার পর আসামিদের কাছ থেকে টাকা তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি স্বীকার করে। তবে তারা এ টাকা ফেরত দিবে বলেও জানিয়ে দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে টাকাগুলো তারা আর ফেরত দেয়নি এবং যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

এরপরই লিমন নিজে বাদী হয়ে তাজহাট থানায় মো. নুরুল ইসলামের ছেলে মুনজিম ইসলাম (১৯) ও মো. মেহেদী হাসান (৩২), মাহামুদুল ইসলামের ছেলে মো. আসমাউল ইসলাম অমিও (১৯), রিয়াদ (১৯), মো. আনারুলের ছেলে মো. আবিদ (১৮), সারাবান তহুরা (২০) এবং মো. সাঈদ হাসানসহ (১৯) অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, অভিযোগটি যাচাইবাছাই শেষে সোমবার মামলা হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী লিমনের বোন অ্যাডভোকেট মাহিয়া মেহজাবিন রিফার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘আসামিরা আমার ভাই ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে তার বিরুদ্ধে তাজহাট থানায় আমরা একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম, তদন্ত ও যাচাই-বাছাই শেষে অভিযোগটি মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামিদের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে কি না জানি না। তবে শুনেছি তারা মামলার খবর পেয়ে পলাতক আছে।’ এদিকে তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল কাদের আমাদের প্রতিদিনকে মোবাইলে বলেন, ‘প্রতারণার অভিযোগে উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে ও আসামি ধরার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’