দুর্নীতিগ্রস্তরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে: প্রধানমন্ত্রী

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-26 11:51:29

ঢাকা অফিস:

কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে তার তথ্য চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের কাছ থেকে দুর্নীতির কথা শুনতে হচ্ছে।

গতকাল শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ, কার্যনির্বাহী সংসদ এবং উপদেষ্টা পরিষদের যৌথসভার মুলতবি সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গত ৭ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এ যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি নিয়ে যে কথা বলে, আমি তো পার্লামেন্টে বলেছি- কোথায় দুর্নীতি হচ্ছে আমাকে তথ্য দেন, আমি ব্যবস্থা নেব।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘(দুর্নীতির কথা) শুধু মুখে মুখে বললে তো হবে না। এখন এমন এমন লোকজনের কাছ থেকে আমাকে শুনতে হচ্ছে যারা নিজেরাই দুর্নীতিগ্রস্থ। যাদের আমলে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অথবা কেউ বলতে গেলে ওই ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করতে যেয়ে গরিব মানুষের উপর এমন চাপ যে সুদ দিতে দিতে তাদের অনেক সময় বাড়িঘর ছেড়ে এলাকা থেকে চলে যেতে হয়েছে অথবা আত্মহত্যা করতে হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই গরীব মানুষের টাকা দিয়েই কিন্তু দেশে নাম-টাম করে কিন্তু বেশ ভালোই আছে এবং প্রচুর অর্থ সম্পদের মালিক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিনিয়োগও করে ফেলেছেন এই টাকাগুলো কোথা থেকে? এগুলো গরিবের রক্তচোষা টাকা তো, এটাতো বাস্তব কথা।’

বিগত সময়ে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা যা যা চেয়েছিলেন আমরা সেগুলো কিন্তু একে একে করে দিচ্ছি মানুষকে। তার যে স্বপ্নটা সেটাই বাস্তবায়ন করা আমাদের লক্ষ্য। এত কাজ করার পরেও কিছু লোক আছে তাদের কোন কিছু ভালো লাগে না।’

দেশে বেকার থাকার সুযোগ নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কিন্তু আমাদের দেশের এক একটা সেক্টরকে ধরে ধরে আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার ফলে আজকে আমরা দারিদ্র কমাতে পেরেছি। কর্মসংস্থান ব্যাপকভাবে বাড়াতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন তো ওরকম কেউ ইচ্ছে করলে বেকার থাকতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বেকার থাকার কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা এত সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে অনেক ছেলেমেয়ে কিন্তু এখন গ্রামে বসে টাকা উপার্জন করছে। কাজে এভাবে যত সুযোগ আছে আমরা করে দিয়েছি।’

আওয়ামী লীগ ওয়াদা রক্ষা করে মন্তব্য করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী অঙ্গীকার দেশেবাসীর কাছে উপস্থাপন করে এবং সবসময় তাদের নির্বাচনী অঙ্গীকার রক্ষা করে।

‘আমরা কথা দিয়েছি- প্রতি বাজেটে নির্বাচনের ইশতেহার সামনে রেখে আমরা পরিকল্পনা নেই। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা যখন করি সেখানেও আমাদের ঘোষণাপত্র, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার মাথায় রেখে, সামনে রেখেই আমরা কিন্তু করি। অর্থাৎ যে ওয়াদা জাতিকে দেই সেটা আমরা রক্ষা করি। আওয়ামী লীগ যেটা বলে মানুষের জন্য যে ওয়াদা করে, সে ওয়াদা আওয়ামী লীগ রক্ষা করে। এটা হল বাস্তবতা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সার কথা হলো আওয়ামী লীগ যে কথা দেয় আওয়ামী লীগ সে কথা রাখে এবং জাতির কল্যাণে আমরা কাজ করি এবং মানুষ তার শুভ ফল পাচ্ছে।’

দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চিন্তা করতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ যেন মাথা তুলে চলতে পারে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের যে পরিবর্তন ঘটেছে। আমি জানি এটা অনেকেই নিতে পারে না। নানা ধরণের কথা রটায়। কিন্তু মানুষের জীবন যাত্রায় যে পরিবর্তন এসেছে। তাছাড়া রাস্তাঘাটসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি আমরা করেছি। এটাকেও অনেকই স্বীকার করতে চায় না। করতে চাইবেও না।’

টানা ১৪ বছর সরকারে থাকায় ধারবাহিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে মানুষের জীবনমান উন্নীতি হয়েছে দাবি করে সরকার প্রধান বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের দেশেও যারা একেবারে নির্দিষ্ট বেতনে চলতে হয় তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে। সেটা আমরা বুঝি। সেই জন্য বিদেশ থেকে অনেক টাকা খরচ করে খাবার কিনে নিয়ে আসতেছি। ভর্তুকি মূল্যে সেটা দিচ্ছি। আমি জানি না বাংলাদেশে আর কোন সরকার এই ভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করেছে কিনা?’