নীলফামারীতে তাপমাত্রা ৭.৮ ডিগ্রি জনজীবন বিপর্যস্ত

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-19 17:32:44

নীলফামারী প্রতিনিধি:

নীলফামারীতে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমশ কমছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ এবং গতিবেগ পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ছয় কিলোমিটার। সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও, ঘন কুয়াশায় দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে দূরপাল্লার যানবাহন। শহরে লোক চলাচল ছিল খুবই সামান্য। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। কনকনে ঠান্ডায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষজন। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন। জেলা শহরের স্টেশন রোড গাছবাড়ী এলাকার রিকশাচালক কমর উদ্দিন (৫৯) বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকে শহরে লোকজনের চলাচল কমে গেছে। শীতে কামাই-রোজগারও কমে গেছে। রিকশার ওপর হাত-পা গুটিয়ে চুপচাপ বসে আছি।’

একই শহরে বাসাবাড়িতে হাজিরার কাজ করেন দিনমজুর মমতাজ আলী (৬৭)। তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে কাজ খুঁজছিলাম কিন্তু কেউ কাজে নেয় নাই। তাই বাড়ি চলি যাইচি। ঠান্ডায় হাত-পাও অবশ হইছে, বাড়িয়ালারাও ঠান্ডায় কাজে নেয় না। পেটে খায়, তাই কাজ খুঁজছি কিন্তু কাজ পাই নাই।’

নীলফামারী শহরের নিউ বাবুপাড়ার গৃহিণী ফেরদৌসি বেগম (৩৮) বলেন, ‘গত তিন দিন ধরি শুনছি তাপমাত্রা উঠানামা করছে। আজকে নাকি ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। বাসার কাজ-কাম করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এভাবে আরও কয়েকদিন চললে মানুষ ঠান্ডায় আরও কাতর হবে।’

সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম বলেন, ‘জেলায় সোমবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস, মঙ্গলবার ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ডিমলায় সকালে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে।’

তিনি আরও বলেন, গতকাল ‘বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ওঠানামা করছে। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ এবং গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় পশ্চিম দিক থেকে ছয় কিলোমিটার এবং দৃষ্টিসীমা ছিল সকালে ২০০ মিটার। এমন আবহাওয়া আরও কয়েকদিন থাকতে পারে।’ নীলফামারী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল করিম বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের পক্ষে এ পর্যন্ত ছয় উপজেলায় ৫০ হাজার ৬৪০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।’ সরকারের পাশাপাশি এনজিও, বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।