কুড়িগ্রামে শিক্ষক পিটানোয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন সাধারণ সম্পাদক

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-20 16:50:08

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ধরে নিয়ে গিয়ে দু’দফায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকনের বিরুদ্ধে। আজ শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিভিন মিডিয়ায় সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য ছড়িয়ে পরলে জেলা জুড়ে শুরু হয় তোলপাড়। এদিকে নির্যাতনকারীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হোরায়রা।

ঘটনার নেপথ্যে জানা যায়, কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুন্নীর সাথে ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষক আসাদুল ইসলামের প্রধান শিক্ষক পদ এবং শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দ্বদ্ব চলে আসছিল। এরই জেরে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন ও আসাদুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবীকে হেনস্তা করার পরিকল্পনা। এরই জেরে গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী অফিসিয়াল কাজে রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক অফিসে কাজ শেষে বেরিয়ে আসার পর রোকনুজ্জামান ও আসাদুল ইসলামসহ ১০/১২জন সন্ত্রাসী তাকে ধরে নিয়ে যায় পাশর্^বর্তী পলি বাস কাউন্টারে। সেখানে একদফা নির্যাতনের পর তাকে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু হোরায়রার কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রোকনুজ্জামান সবার সামনে এলোপাথারীভাবে চড়-থাপ্পর ও কিল ঘুষি মারেন । সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য ছড়িয়ে পরলে জেলা জুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচানার ঝড়। এ ঘটনায় আসাদুল ইসলাম ও রোকনুজ্জামান রোকনের নামে রৌমারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষক নুরুন্নবী।

এ ব্যাপারে নিজের দোষ অস্বীকার করে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক রোকনুজ্জামান রোকন জানান, আমাকে দালাল বলায় আমি ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষককে মারতে যাই। এনিয়ে আমাকে আওয়ামীলীগ সেক্রেটারী আমাকে জুতোপেটা করেছেন। আমার তো শাস্তি হয়েইগেছে। জুতাপেটা খেয়েছি আর কি হবে।

ফুলকারচর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুন্নবী জানান, স্কুলের কাজের জন্য আমি উপজেলা মাধ্যমিক অফিসে আসি। সেখান থেকে নামার পর আমাকে ১০/১২জন গুন্ডা ধরে নিয়ে যায়। তারা আমাকে দু’দফায় মারপীট করে। পরে আমি থানায় গিয়ে দুইজনের নামে মামলা দায়ের করি। স্কুলে সহকারি শিক্ষক আসাদুল ইসলামের সাথে দ্বদ্ব চলে আসছিল বলে তিনি স্বীকার করেন। আমি এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।

এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও রৌমারী সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু হোরায়রা জানান, এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। বিষয়টি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীকে মো. জাকির হোসেন এমপিকে অবগত করা হয়েছে। তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। পরের সপ্তাহে এসে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের কথা নিশ্চিত করে রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ রুপকমুার জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষক মারধরের ঘটনায় থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দায়েল করেছেন। আমরা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।