রংপুরের পীরগঞ্জে মৃৎশিল্পের কারিগরদের কষ্টে  দিন কাটছে

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-24 07:38:16

আজাদুল ইসলাম আজাদ পীরগঞ্জ (রংপুর):

রংপুরের পীরগঞ্জে মৃৎশিল্পের কারিগরদের দিন কাটছে অতি কষ্টে। এই শিল্পে ঐতিহ্য আঁকড়ে থাকা পাল বংশের লোকদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। আশায় আশায় প্রতিবছর গুড় রাখার পাত্র মটকি বানিয়ে মজুদ করে রাখলেও, বেচাকেনা  কম। ফলে এ পেশায় তারা হতাশ হয়ে পড়েছে।  শিল্পে জড়িয়ে ছিল এখানের শতাধিক পরিবার।কষ্ট হলেও তাদের পূর্ব-পুরুষদের এ পেশা ধরে রেখেছে। কিন্তু বর্তমানে এই শিল্পের কারিগরদের নিপুণ হাতে তৈরি এই জিনিসপত্রের মধ্যে গুড় রাখার পাত্র উপজেলায় চাহিদা ছিল অনেক। তবে আখের চাষাবাদ কমে যাওয়া মটকির চাহিদাও কিছুটা কমেছে। উপজেলার চন্ডিপুর পাল পাড়া গ্রামের প্রায় ১৫ জন কারিগর খালাশপীর, ফলিরবিল এবং বাবনপুর তিনটি স্থানে এসব মটকি বানিয়ে থাকে।

মটকি তৈরির কারিগর গনেশ পাল, অজয় পাল এবং ভুবন পাল বলেন, গুড়ের চাহিদা অনুযায়ী তারা মটকি বানিয়ে মজুদ করে। এ বছর এখন পর্যন্ত টাকি টুকি বেচা-কেনা হচ্ছে। সবকিছুর দাম বাড়লেও এ শিল্পের কারিগরদের দাম আগের মতোই রয়েছে। প্রতিবছর ৩ থেকে ৪ শত টাকা মটকির জোড়া বিক্রি হলেও এবছরও সে হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। মাটকি তৈরি করতে মাটি কেনা লাগে তার পরেও পরিবহন খরচ সবমিলিয়ে কোনো রকমে দিন কাটছে তাদের । কাউকে বলতেও পারে না এবং ব্যবসা ছাড়তেও পারছেনা ।  মাটির মায়ায় পূর্বপুরুষদের পেশায় এখনও তারা টিকে আছেন। যুগের সাথে তালমিলিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন তারা ।

স্থানীয় লোকজন বলছেন, উপজেলার তিনিটি স্থানে মটকি তৈরির কারখানা রয়েছে। বর্তমানে আখের আবাদ কিছুটা কমে গেলেও যেটুকু রয়েছে সেই আখ থেকে চাষিরা গুড় মাড়াই করে। সাধারণত চাষিরা গুড় মজুদের জন্য মটকি ব্যবহার করে থাকেন। অনেক চাষি গুড় মাড়াই করে সাথে সাথেই বিক্রি করে থাকেন। যে কারনে মটকির চাহিদা কিছুটা কম। তবে পূর্বপুরুষের পেশা বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে তাদের দিন কাটছে আমাদের।

গুড় মাড়াই কারখানার মালিকরা বলছেন, গুড় মাটির তৈরি চাড়িতে রেখে তারাতাড়ি বিক্রি করা হচ্ছে, তাছাড়া চাড়ির দাম কম। গুড় মাড়াই করে বাজারে বিক্রি করলে চাড়ির প্রয়োজন পড়ে । আর গুড় মজুদের জন্য মটকির প্রয়োজন হয়।