ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত বোরো বীজতলা

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-18 20:16:39

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলা ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চারা বিবর্ণ হয়ে হলুদ ও লালচে রং ধারণ করছে। চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ফলে বোরো চাষের আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অবশ্য কৃষি অফিস বলছে, কৃষকদের যাবতীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২২ হাজার ৩৫০ হেক্টর, বীজতলা করা হয়েছে এক হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের নারিকেলবাড়ী, রামদাস ধনিরাম, গুনাইগাছ ইউনিয়নের মহিদেব, কাঁঠালবাড়ী, গাবেরতল, থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফরা, সাতদরগাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে।

পৌর শহরের নারিকেলবাড়ী এলাকার কৃষক এরশাদুল হাবীব জানান, আমি প্রায় ছয় একরের মতো জমিতে বোরো ধান রোপণ করব। কিন্তু ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছি। তিনি আরো বলেন,  প্রতিবার শেষের দিকে চারা রোপণের পর অবশিষ্ট ধানের চারা বিক্রি করি,  এবার হয়তো তা হবে না। কারণ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ঘন কুয়াশা ও শীতের প্রকোপ বেশি হওয়ায় এবার বীজতলার চারা মরে যাচ্ছে।

গুনাইগাছ ইউনিয়নের মহিদেব এলাকার কৃষক রায়হান মিয়া জানান, আমার বীজতলার পরিস্থিতি খুব খারাপ, এখন কী করব না করব ভেবে পাচ্ছি না। ওষুধ দিয়ে কোনো কাজ হচ্ছে না। আমি কৃষক মানুষ, কোনো উপায় পাচ্ছি না।

থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফরা গ্রামের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ‘যেভাবে কুয়াশা পড়ে এই শীতত বেছন (বীজতলা) চ্যাতে (বৃদ্ধি) নাই। বেছন নাল ও হলদিয়া হইছে।’

রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা তুহিন মিয়া জানান, মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে আগামী কয়েক দিনের মধ্য তাপমাত্রা বাড়তে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বেশ কিছুদিন থেকে ঘন কুয়াশা ও শীত বেড়েছে, তবে বীজতলার খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। এখনো সময় আছে, আবহাওয়া পরিবর্তন হলে এই সমস্যার সমাধান হবে। কৃষকদের বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা, রাতে পানি জমিয়ে রেখে সকালে নিষ্কাশন করে দেওয়া ও গভীর নলকূপ দিয়ে আবার পানি সেচ দেওয়াসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।