দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের কারনে হত্যার শিকার কলেজ ছাত্র

আমাদের প্রতিদিন
2024-03-27 21:33:45

পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং:৪ জন গ্রেফতার

দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দিনাজপুরে লাশ উদ্ধারের দু’দিনের মধ্যেই কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুলের হত্যা রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। পাশাপাশি হত্যার সাথে জড়িত ৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রহস্যে উঠে এসেছে ত্রিভুজ প্রেমের কারনেই গত ৪ মার্চ দিন-দুপুরে হত্যার শিকার হয় কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুল। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিং-এ এমনই তথ্য নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো-দিনাজপুর সদর উপজেলার মোঃ রশিদের পুত্র মোঃ দেলোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী দিনাজপুর উপশহরের ৬নং এলাকার মোঃ উজ্জল হোসেনের পুত্র মোঃ শাকিব শাহরিয়ার, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোঃ আফজাল হোসেনের পুত্র মোঃ আশরাফুল হোসেন মিলন এবং হাউজিং মোড় এলাকার মোঃ হামিদুর রহমানের পুত্র আসিফ মাহমুদ হৃদয়।

দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ পিপিএম-সেবা জানান, নিহত শাহরিন বিপুলের ভাই মোঃ শাহরিয়ার আলম কোতয়ালী থানায় একটি নিখোজ ডায়েরী করে ৫ মার্চ। নিখোজ ডায়েরীতে উল্লেখ করা হয় ৪ মার্চ থেকে তার ভাই বিপুলকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে গত ৬  মার্চ দুপুর সোয়া ২টায় নিখোঁজ কলেজ ছাত্র শাহরিন আলম বিপুলের লাশ দিনাজপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারীর নীচে আবর্জনা থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর বড় ভাই শাহরিয়ার আলম দেলোয়ারের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং-২২/১৯১, তারিখ-৬/০৩/২০২৩ইং।

প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃত দেলোয়ারের সাথে এক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। এসব জানাজানির পর ওই মেয়ের বাড়ি থেকে বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তবে খোঁজ খবর নিতে দেলোয়ার হোসেন আশ্রয় নেয় প্রেমিকার বান্ধবীর। একপর্যায়ে ওই বান্ধবীর সাথে দেলোয়ারের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ওই বান্ধবীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল দিনাজপুর সিটি কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী শাহরিন আলম বিপুলের। যা দেলোয়ার মেনে নিতে পারছিলো না। ফলে সে বিপুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী দেলোয়ার একটি ফ্যাক আইডি খুলে বিপুলের সাথে কথা বলে বিশ^াস অর্জন করে। একপর্যায়ে গত ৪ মার্চ সকালে ক্যামেরা ধার দেওয়ার কথা বলে বিপুলকে দিনাজপুর স্টেডিয়ামে ডেকে নেয়। সেখানে ওৎ পেতে থাকা দেলোয়ার ও তার সহযোগিরা বিপুলের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মাথার পিছনে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে তারা বিপুলের লাশ আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রেখে পালিয়ে যায় এবং আত্মগোপন করে। ৬ মার্চ লাশ উদ্ধারের পরই পুুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে অভিযান শুরু করে।

প্রেস বিফ্রিং-এ উপস্থিত ছিলেন, দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মমিনুল করীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন, কোতয়ালী থানার ওসি মোঃ তানভীরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ শামীম।

পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ এই প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং এর বিষয়ে সকলকে সাবধানতা অবলম্বন করার আহবান জানিয়ে বলেন, দিনাজপুরে অর্থ আত্মসাৎ, প্রতারনা ও হত্যাকান্ডসহ পর পর কয়েকটি ঘটনা ঘটলো। প্রত্যেকটি ঘটনার সাথে ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং সংযুক্ত। এ ব্যাপারে সকলকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।