অবশেষে আকাশে ডানা মেললো ১০শকুন

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-24 02:13:25

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যান সিংড়া শালবন শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবার পর সুস্থ্য হয়ে আকাশে ডানা মেলল ১০শকুন।

গত ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের শুরুতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটক হওয়া বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন প্রজাতির শকুন উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যান সিংড়া শালবন শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে। সেখানে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলার পর ১০ শকুনকে ছেড়ে দেওয়া হয় প্রকৃতির মুক্ত হাওয়ায়।

১৫মার্চ বুধবার দুপুরে আনুষ্ঠানিক ভাবে দর্শনার্থী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে সুস্থ্য ১০শকুনকে প্রকৃতির মাঝে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) মুখ্য গবেষক এবিএম সারোয়ার আলম, বিশ্বব্যাপী হুমকির সম্মুখীন প্রজাতি নিয়ে কাজ করা সেভ প্রকল্প পরিচালক মি. ক্রসি বাউডেন, বন সংরক্ষক, বন্য প্রানী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, বন বিভাগ ইমরান আহম্মেদ, আইইউসিএন প্রতিনিধি সাকিব আহম্মেদ ও কাজী জেনিফার আজমেরী, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুর মোঃ বশিরুল-আল-মামুন, ঠাকুরগাঁও ফরেষ্ট রেঞ্জার তাসলিমা খাতুন প্রমুখ।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) মুখ্য গবেষক এবিএম সারোয়ার আলম জানান, উদ্ধারকৃত শকুনগুলি পরিযায়ী প্রজাতির শকুন। শকুনগুলি শীতকালে হিমালয় অঞ্চল হতে আমাদের দেশে আসে। অনেক দুর পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের দেশে আসার সময় দুর্বল হয়ে পড়ে। দুর্বল হয়ে পড়া শকুনগুলি লোকালয়ে আটক হয়। তাদের উদ্ধার করে বনবিভাগের এবং আইইউসিএন এর চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলে। পরে তাদের জীবানু মুক্ত করে ছেড়ে দেওয়া হয়। মুলতঃ রংপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় অঞ্চলে বেশি উদ্ধার হয়। এ বছর ৪৬টি শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে এখান হতে কিছু শকুন অবমুক্ত করা হয়। অন্যান্য সাফারি পার্কে কিছু শকুন রয়েছে। কিছু জায়গায় ভ্রাম্যমান উদ্ধার সেন্টার করে সুস্থ্য করার পর প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত সারা দেশে ২৪৯টি শকুন প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজকে ৩টি শকুনের শরীরের স্যাটালাইট ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানো হয়েছে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখার জন্য। উদ্ধার শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রটি উত্তর বঙ্গে প্রথম। এই প্রকল্পটির ২০১৪সালে যাত্রা শুরু হয়। দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা বশিরুল আল মামুন জানান, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রচন্ড শীতের কারণে হিমালয় হতে আসা দেশের ৮টি জেলায় আটক  হওয়া শকুন উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলা হয়। এরপর তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আবার প্রকৃতি ছেড়ে দেওয়া হয়। বিপন্নপ্রায় শকুন রক্ষায় আমরা এই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। শকুনের বংশ বিস্তার এবং এর অস্তিত্ব রক্ষায় এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।