পীরগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধিঃ
রংপুরের পীরগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। নদী-খাল-বিলে এসব ফাঁদ পেতে ব্যাপক হারে ছোট মাছ শিকার করছে জেলে ও সুবিধাভোগী লোকজন। উপজেলার সর্বত্র নতুন ফাদ চায়না দুয়ারি বিভিন্ন জলাশয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছের বিলুপ্তির শঙ্কা প্রকাশ করছেন সচেতনমহল।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, উপজেলার খালবিল,আখিরা নদী ও করতোয়া নদীতে চায়না দুয়ারী জাল ব্যাপক হারে ব্যবহার করা হচ্ছে। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া সেতু হইতে চতরা এলাকার টোংরার দহ্ পর্যন্ত শতশত জাল দিনরাতে মাছ শিকার করছে। জেলেসহ সাধারণ মানুষ এই জালে মাছ শিকার করছে। আর এই ফাঁদে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এই ফাঁদ বসালে নদীর পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়ে জালের ছিদ্র ছোট হওয়ায় ছোট-বড় কোনো মাছ বের হওয়ার কোন সুযোগ থাকেনা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লোহার রডের গোলাকার বা চতুর্ভুজ আকৃতির কাঠামোর চারপাশে চায়না জাল দিয়ে ঘিরে এই চায়না দুয়ারি নতুন ফাঁদ তৈরি করা হয়েছে। এই ফাঁদ দিয়ে
উপজেলার খালবিল এবং নদী জলাশয় মাছ শিকার করছে এক শ্রেণির জেলেসহ সাধারন মানুষ।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন বাজারে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছের পোনা বিক্রি হচ্ছে, যেগুলো চায়না দুয়ারি দিয়ে ধরা বলে স্থানীয়রা দাবি করছে।
উপজেলার চতরা ইউনিয়নের মৎস্য শিকারী মুক্তার মিয়া বলেন, উভয় দিক থেকে ছুটে চলা যেকোনো মাছ সহজেই এতে আটকা পড়ে। একবার যেকোনো ছোট-বড় মাছ ঢুকলে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। প্রশাসনের চোখের সামনে এভাবে নীতি বিরুদ্ধ কাজটি চলে আসছে নিরন্তর।
উপজেলার শিক্ষক নুরুল ইসলাম, মতিয়ার রহমান বলেন, চায়না দুয়ারি এসে আমাদের দেশীয় মাছের বংশ শেষ করে দিচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদিন দেশীয় মাছ আমরা সহজে পাবো না। শুধু দেশি জাতীয় ছোট মাছ নয় বরং এই জালে আটকা পড়ে সকল প্রজাতির জলজ জীব। স্বল্প ব্যয়ে এবং স্বল্প পরিশ্রমে অধিক আয়ের উৎস হওয়ায় মাছ আরোহীদের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এটি। করতোয়া নদীর উজান থেকে বেরিয়ে আসা এ পানিতে রয়েছে মাছের ডিম ও পোনা। ক্ষুদ্রাকৃতির কোনো মাছের পক্ষেও সম্ভব নয় এ ফাঁদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার। দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলে আসলেও প্রশাসনের ভূমিকা লক্ষ্য করা যায়নি। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। অবৈধ চায়না দুয়ারি জালে রেনু পোনাও রেহাই পাচ্ছে না।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হাসান এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কয়েকটি অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল আটক করা হয়েছে এবং চায়না দুয়ারী জাল আটকের অভিযান চলমান রয়েছে।