সোনালী ধানে স্বপ্ন দোলে

আমাদের প্রতিদিন
2024-04-26 16:49:42

মিঠাপুকুরে ছাড়িয়েছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা

সবুজ আহম্মেদ, মিঠাপুকুর (রংপুর):

‘আলহামদুলিল্লাহ, ধান ভাল হোচে বাহে। আল্লাহ্ জমিত ধান ঢালি দিচে। কোন গায়-গজব হয়নাই। ভাল ভাবে ধান ঘরোত তুলব্যার পারোছি। যেটা আশাকরছিনু, তারচাইতেও বেশি ধান হোচে।’ -বলছিলেন উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের কাঁঠালী গ্রামের কৃষক সেরাজুল ইসলাম। তিনি এক একর জমিতে ধান চাষাবাদ করেছেন। ফলনও হয়েছে ব্যাপক। আশায় বুক বেধে থাকা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পথে। উচ্ছাস প্রকাশ করছেন মিঠাপুকুরে লক্ষাধিক কৃষক। তাদের চোখে মুখে হাসি ফুটেছে উঠেছে।

কৃষকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের তৎপরতা ও অনুকুল আবহাওয়ার কারণে ব্যাপক ফলন হয়েছে বলে কৃষিবিদরা মনে করছেন। এর ফলে মিঠাপুকুরে খাদ্য ঘাটতির কোন সম্ভাবনা নেই। উপরোক্ত উদ্বৃত্ত¡ খাদ্যে ভরপুর থাকবে মিঠাপুকুর।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মিঠাপুকুরে ৩৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হওয়ার লক্ষমাত্র নির্ধারন করা হয়েছিল। কিন্তু, আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। ১ হাজার হেক্টর জমিতে বেশি আমন ধান চাষাবাদ করেছেন কৃষকেরা। ধান উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭ হাজার ৯৯৮ মেট্রিক টন। তবে, এরচেয়েও অনেক বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ মনে করছেন। ইতোমধ্যে মিঠাপুকুরে ৫০ ভাগ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে।

উচ্চ ফলনশীল জাতগুলোর মধ্যে কর্তনকৃত জমিতে হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ৫ দশমিক ৫ মেট্রিক টনেরও বেশি ধান। মিঠাপুকুরে মুলত. ব্রি ধান-৮৭, ব্রি ধান-৭৫, স্বর্ণা, বিআর-১১, বিনা ধান-১৭ জাতের ধান বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়াও, স্থানীয় বেশকিছু জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন কৃষকেরা।

গোপালপুর ইউনিয়নের কৃষক রাকিবুল ইসলাম বলেন, ধানের ফলন ভাল হয়েছে। তবে, খরচ হয়েছে বেশি। যদি ধানের দাম ভাল পাওয়া যায়, তাহলে বেশ লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের কৃষক নজম উদ্দিন পাইকার বলেন, এবারে বৃষ্টি কম হয়েছে, বেশিভাগ জমিতে পানি সেচ দিতে হয়েছে। একারণে খরচ হয়েছে বেশি। ধানের বাজারমূল্য অনুপাতে কৃষকেরা লাভবান হতে পারে।

দূর্গাপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম বলেন, আমন চাষাবাদের আগ হতে আমাদের কৃষি বিভাগ তৎপর ছিল। চাষাবাদের জন্য জমি তৈরী, চারা রোপণ, পরিচর্যা, পরিমাণমত সার প্রয়োগ এবং পোকামাকর দমনে আমরা সজাগ ছিলাম। প্রতিনিয়ত কৃষকের সাথে যোগাযোগ ও পরামর্শ দিয়ে ধান উৎপাদনে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছে মিঠাপুকুর কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল আবেদীন বলেন, কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকের জন্য নিবেদিত। আমরা প্রত্যক্ষভাবে কৃষকেরা সাথে কাজ করেছি। কৃষকেরাও আমাদের পরামর্শ অনুয়াযী মাঠে মেহনত করেছে। মিঠাপুকুর কৃষিবিভাগ ও কৃষকের যৌথ প্রচেষ্টা এবং অনুকুল আবহাওয়ার কারণে এবাবে আমন মৌসুমে ধানের ভাল ফলন হয়েছে।