দিনাজপুরে অনুষ্ঠিত হলো কৈলাশপতির দু’দিন ব্যাপী মহাস্নান যাত্রা

দেশ বিদেশের হাজারো ভক্ত ও পূণ্যার্থীর ভীড়
দিনাজপুর প্রতিনিধি:
ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য আর উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে দিনাজপুরে সোমবার (২৮ আগষ্ট) সম্পন্ন হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির দু’দিনব্যাপী ৫০ তম মহাস্নান যাত্রা। দু’দিনব্যাপী এই মহাস্নান যাত্রায় দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ভক্ত ও পূর্ণার্থী অংশ নেয়।
আয়োজকরা জানান, প্রতিবছর শ্রাবন মাসের শেষ অথবা তার আগের সোমবারে দিনাজপুর শহরের আনন্দ সাগরস্থ শিব মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রা। এর আগের দিনে দিনাজপুর শহর হতে ৩২ মাইল উত্তরে পুনর্ভবা নদীর বিপরীতমুখী (উত্তরমুখী) প্রবাহিত রাতে হতে জল সংগ্রহ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্ত ও পুর্ণাথীরা। সারা দিন বাদ্য বাজনা আর উৎসবের আমেজে দীর্ঘ ৩২ মাইল নগ্ন পদব্রজে (খালি পায়ে হেটে) ভক্ত ও পূর্ণাথীরা এই জল নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় দিনাজপুর শহরে এসে পৌছে। এরপর এই জল নিয়ে তারা রাতেই পৌছে দিনাজপুর শহর থেকে ৭ মাইল দুরে আত্রাই নদীতে। প্রত্যুষে সেখানে স্নান করে তারা আবার পদব্রজে এসে পৌছে শহর সংলগ্ন আনন্দ সাগরস্থ শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দিরে। শিবমন্দিরের চারপাশে সাত পাক দিয়ে এই জল দিয়ে স্নান করায় কৈলাশপতি শিব মুর্র্তিকে।
এদিকে এই ¯স্নানযাত্রাকে ঘিরে শ্রী শ্রী গোষ্টধাম শিব মন্দির প্রাঙ্গনে বসে মেলা। মেলায় প্রসাধনী, ধর্মীয় বই-পুস্তক, শিশুদের খেলনাসহ মিষ্টি ও মিষ্টান্ন দোকানের পসরা বসে।
আয়োজকরা জানান, শুধু দিনাজপুর নয়, সারা বাংলাদেশ এমনকি ভারত থেকে অনেক ভক্ত ও পূর্ণার্থী এই মহাস্নানযাত্রায় অংশ নিতে আসেন।
স্নানযাত্রায় অংশ নেয়া হিন্দু পুণ্যার্থী দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সুদীপ্তা রানী রায় জানান, মনের বাসনা পুরন এবং তাদের পরিবারের মঙ্গল কামনায় মহাস্নান যাত্রায় অংশ নিতে প্রতিবছর তারা এখানে আসে। পরিবারের মঙ্গল কামনার পাশাপাশি বিশ্ব শান্তি কামনায় এখানে আসা বলে জানিয়েছে ভক্তরা।
আয়োজক কমিটির অর্জুন কুমার পাটোয়ারী জানান, দিনাজপুরে ১৯৭৪ সালে এই মহাস্নানযাত্রা উৎসব শুরু করেন। পরে প্রতি বছর এই উৎসব পালন করা হয়। এটিই বাংলাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ কৈলাশপতির ¯স্নাসযাত্রা ।আমাদের বিশ্বাস যে কোন মনোবাসনা নিয়ে কেউ যদি মন থেকে এই শিব ঠাকুরের পুজা করে তবে ঠাকুর সেটি পূর্ণ করে দেন। সেই বিশ্বাস থকে প্রতি বছর আমরা মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহা স্নানযাত্রা পুজা করে আসছি।
কমিটির সদস্য বিমল কুমার আগরওয়ালা বলেন, আমরা এই পুজা পরিচালনা করছি ৫০ বছর ধরে। প্রথম ১১ জন থেকে শুরু করে আজ হাজার হাজার ভক্ত-পুণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণভাবে এই উৎসব সম্পন্ন করতে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।