যমুনেশ্বরীর ভাঙনে চরম ঝুঁকিতে বন্দর রক্ষা বাঁধ ও আশ্রায়ণ প্রকল্প বিলিন হচ্ছে ফসলী জমি-বসতভিটা

তাহাম্মেল হোসেন সবুজ, মিঠাপুকুর (রংপুর):
মিঠাপুকুরে যমুনেশ্বরী নদীর ভাঙনের বিলিন হচ্ছে একরের পর একর ফসলী জমি ও বসতভিটা। অব্যাহত ভাঙনের মুখে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বালুয়া বন্দর রক্ষা বাঁধ ও আশ্রায়ণ প্রকল্পের শতাধিক বাড়ি।হঠাৎ নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়েক বছরের মধ্যে এবারেই তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরফলে বসবাসে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে নদীর আশপাশের গ্রামগুলো। ৩ ইউনিয়নের মানুষগুলো ভাঙন রক্ষায় জরুরীভিত্তিতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৩ ইউনিয়নের বুক চিরে প্রবাহিত যমুনেশ্বরী নদীর দু’কুল ভাঙনের কবলে পড়েছে। অব্যাহত ভাঙনের ফলে বিলিন হয়েছে ফসলী জমি ও বসতভিটা। সবচেয়ে বেশি ভাঙনের মুখে পড়েছে বালুয়া মাসিমপুর, বড়বালা ও মিলনপুর ইউনিয়নের প্রায় ১০ গ্রাম। এরমধ্যে চরম ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে উচাঁ বালুয়া, হাছিয়া, গুঁটিবাড়ী, পূর্ব বড়বালা, আটঁপুনিয়া, পলিপাড়া মাসিমপুর, হরেকৃষ্ণপুর, তরফসাদী ও জানকীপুর গ্রাম। এসব গ্রামের কয়েক’শ হেক্টর ফসলী জমি যমুনেশ্বরীর থাবায় বিলিন হয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়েছে অনেক বাড়ীঘর।
চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বালুয়া বন্দর রক্ষা বাঁধ ও বছরখানেক আগে নির্মিত আশ্রায়ণ প্রকল্পের শতাধিক বাড়ি। ইতোমধ্যে বালুয়া বন্দর রক্ষা বাঁধের পশ্চিম অংশ অনেকখানি ভেঙে গেছে। আর কয়েকদিন এভাবে ভাঙনের কবলে থাকলে বাঁধের একটি বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরফলে বাঁধের পাশেই আশ্রায়ণ প্রকল্পটি হওয়ায় সেটিও রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কয়েক বছরের মধ্যে এবারেই সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। নতুন করে ভেঙে যাচ্ছে উর্বর ফসলী জমি। এসব জমিতে আমন ধান ও আখের চাষাবাদ হচ্ছিল। আটপুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আবুবর মিয়া বলেন, এবারে ভাঙন তীব্রতা দেখা দিয়েছে। অনেক জমাজমি নতুন করে নদীতে চলে গেছে। নিঃশ^ হচ্ছে সাধারন কৃষকেরা। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙন রোধ করা দরকার।
বালুয়া পলিপাড়া মাসিমপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, আমার দুঃস্থ্য অসহায় মানুষ। আশ্রায়ণ প্রকল্পে একটি ঘর পেয়েছি। সেটিও ভাঙনের হুমকির মুখে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। বাড়িঘরগুলো ভেঙে গেলে আমরা কোথায় গিয়ে উঠব? আরেক উপকারভোগী সুলতানা রাজিয়া বলেন, দ্রুত ভাঙন মোকাবেলা করতে না পারলে এবছরই আশ্রায়ণ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান বলেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আশ্রায়ণ প্রকল্পের পাশের বাঁধের কিছুটা অংশ ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে। দ্রুত কার্যকরি পদক্ষেপ দরকার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অঃদা) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন বলেন, আশ্রায়ণের পাশে নদীতে ভাঙন ঠেকাতে কয়েকবার বালুর বস্তা ফেলা হয়েছিল। সেখানে জরুরিভাবে স্থায়ী ভাঙন মোকাবেলা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।