মিঠাপুকুরে প্রতিপক্ষের আগুনে পুড়ে ভস্ম খামারির স্বপ্ন, মামলা করায় বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
মিঠাপুকুরে মুদির দোকান ঘর নিয়ে বিরোধের জের ধরে এক ব্যবসায়ির গবাদিপশুর খামার আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মামলার ২ মাস পেড়িয়ে গেলেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামীরা মামলা করায় বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে। অব্যাহত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তহীনতায় ভ‚গছে ব্যবসায়ি ও খামারি রফিকুল ইসলাম। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজারাম গ্রামে।
মিঠাপুকুর থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের রাজারাম গ্রামের বদরুজ্জামান মিয়ার ছেলে মাহাবুব ইসলাম ও মাসুম মিয়ার সঙ্গে মির্জাপুর আদর্শ বাজারের স্টেশনারী ব্যবসায়ি রফিকুল ইসলামের সাথে দোকান ঘর ছাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। গত ৭ জুলাই কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে রফিকুল ইসলামকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন অভিযুক্তরা। এর দেড় ঘন্টার মধ্যেই রফিকুল ইসলামের গবাদিপশুর খামারে আগুন লাগে। এতে খামারে থাকা ৩টি বিদেশী গাভী, ৩টি বকনা গরু, ২টি দেশী গরু, ২টি ছাগল ও বিদেশী কবুতর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনের ঘটনায় আনুমানিক প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতিক্ষতি হয়েছে বলে রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন। এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম মিঠাপুকুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু মামলা দায়েরে ২ মাস পেড়িয়ে গেলেও কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামীরা মামলা তুলে নিতে রফিকুল ইসলামকে হুমকি দিচ্ছে। তাদের অব্যাহত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভ‚গছে তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রফিকুল ইসলামের বাড়ি লাগোয়া ছিল গবাদিপশুর খামারটি। খামারের টিনসেট ঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মাটির সঙ্গে মিলে গেলে সবকিছু। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে গেছে ৮টি গরু, ২টি ও কয়েকটি কবুতর। সেই সাথে ভস্ম হয়েছে রফিকুলের স্বপ্ন। সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তিনি। বিচারের আশায় মামলা করলেও পুলিশ আসামী ধরছেনা। উল্টো আসামীরা তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে বলে জানান রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগুনের ঘটনায় আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। তিলে তিলে গড়ে তোলা খামারটি চোখের পলকে পুড়ে ছাই হয়ে গেল। আমি কিছুই করতে পারলাম না। এ ঘটনায় মামলা করায় আসামীরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। অভিযুক্ত আসামীদের বাড়িতে গেলে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় তাদের মা রশিদা বেগমের সাথে। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আগুনের ঘটনার সাথে আমার ছেলেরা জড়িত ছিল না। যখন আগুন লাগে তখন তারা আমার বাড়িতে ছিল, ভাত খাচ্ছিল।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বৈরাতীহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক মিন্টু রায় বলেন, কথা কাটাকাটির জের ধরে আগুন দেওয়ার বিষয়ে ২ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আসামীরা দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে ও বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে কিন্তু পুলিশ ধরছেনা-এমন অভিযোগ আস্বীকার করেছন উপ-পরিদর্শক মিন্টু রায়।
মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষ করলে বিষয়টি পরিস্কার হবে। আসামী গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে।