৯ আশ্বিন, ১৪৩০ - ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ - 25 September, 2023
amader protidin

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে খানসামায় নিম্ন আয়ের মানুষ

আমাদের প্রতিদিন
2 weeks ago
59


খানসামা(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ

সারাদেশসহ দিনাজপুরের খানসামায় প্রতিনিয়তই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও পার করছে কঠিন সময়।

অথচ দ্রব্যমূল্য ও মানুষের জীবনযাত্রা এ দুটি একইসূত্রে গাঁথা। প্রতিটি পরিবার কীভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করবে তা নির্ভর করে আয়, আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য ও ভোগ্যপণ্যের মূল্যের ওপর। ভোগ্যপণ্যের মূল্য যখন ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, তখন মানুষের মধ্যে থাকে এক ধরনের স্বস্তির ছাপ।

অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে থাকে, তখন তাদের জীবনে ধীরে ধীরে নেমে আসে নানা ধরনের অসুবিধা ও অশান্তি। বর্তমানের সংকটময় মুহূর্তে এ ধরনের অসুবিধায় দিন পার করছে দেশের অধিকাংশ মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। যারা লজ্জায় না পারছে কাউকে কিছু বলতে, না পারছে কারও কাছে হাত পাততে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি জনজীবন যেন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। নিম্ন কিংবা মধ্যবিত্ত মানুষরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিয়মিত আয়ে সংসার চলে না তাদের। রিকশাচালক, দোকানের কর্মী, শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা সংসারের বোঝা বহন করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েছেন অনেকে।

তারা বলেছেন, অবস্থা এমন হয়েছে, না পারছি নিজেরা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে না পারছি কারো কাছে হাত পাততে। খাদ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন নিত্য ব্যবহৃত পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে চাপে পড়েছে সীমিত আয়ের মানুষ। প্রতিদিন খাবার কমিয়ে দিয়ে, একটু সস্তার বাজার খুঁজে কেনাকাটা করে কোনোরকমে পরিবার সামলাচ্ছে এই মানুষেরা।

 

উপজেলার পাকের হাটে বাজার করতে আসা সুবাস চন্দ্র নামে এক স্কুলশিক্ষকের সাথে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের। এসময় তিনি জানান, নিত্যপণ্যের সাথে প্রায় সারাবছরই সবজির দাম থাকে চড়া। শীতের সবজি বাজারে উঠলেও তা এখনো দাম কমেনি। তিনি বলেন, সবজির যে দাম তাতে অন্য বাজারে কুলিয়ে উঠা সম্ভব হবে না। পাইকারি বাজারে সবজির দাম কিছুটা কম হলেও বড়-বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করেই এভাবে সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখি রেখেছে।

হানিফ,বেলাল, শফিকুল, জয়ন্ত, নাজমুলসহ মাসিক ১২-১৫ হাজার টাকা বেতন পান এমন অন্তত ১০ জন ইপিজেড শ্রমিক বলেন, বাজারে সবকিছুর যে দাম তাতে মাসে ৪ হাজার টাকা লেগে যায় সবজি কিনতে। বাকি টাকা দিয়ে কীভাবে পুরো মাসের মাছ, মাংস, রান্নার তেল, পেঁয়াজ, রসুন, হলুদ, মশলাসহ অন্যান্য পণ্য কিনবো? এর বাইরেও তো প্রতি মাসেই টুকটাক কিছু অন্য খরচ থাকে। ফলে সীমিত আয়ে কিছুতেই সংসারের খরচ মেলাতে পারছি না। পান, সিগারেট, চা কিছুই খাই না। তবু মাস শেষে হাতে কোনো টাকা থাকে না। এমনকি মাঝেমধ্যেই সহকর্মীদের কাছ থেকে ধারদেনা করতে হয়।

ছোট ব্যবসায়ী, দিনমজুর, রিকশাভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক থেকে শুরু করে মাঝারি ও নিম্ন আয়ের মানুষরা কেউ ভালো নেই। খরচের চাপে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। কেউ কেউ খাবারে লাগাম টানার চেষ্টা করছেন, কেউ বাড়তি আয়ের চেষ্টা করছেন। অনেকে নিরুপায় হয়ে চাপ সামলাতে গিয়ে জড়াচ্ছেন ঋণের জালে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়