রংপুরে নিরুত্তাপ হরতাল পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি-জামায়াতসহ গণতন্ত্র মে র ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালে উত্তরের বিভাগীয় নগরী রংপুরে কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্কাবস্থানে রয়েছে। রংপুর নগরীসহ জেলার প্রবেশদ্বারসহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন ছিল। দূরপাল্লার ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও স্বাভাবিক ছিল হালকা বাহনের চলাচল। এর ফলে নিরুত্তাপ হরতাল পালিত হয়েছে রংপুরে।
রোববার সকালে নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ দলীয় কার্যালয় থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল করার চেষ্টা করলে মহানগর বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক ফজলে রাব্বী বাবুসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়াও শনিবার রাতে ১৪জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নগরীর বিএনপির কার্যালয়ের পিছন থেকে ৯টি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এদিকে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। হরতালের সমর্থনে বা হরতাল বিরোধী কাউকে পিকেটিং করতে দেখা যায়নি। তবে নগরীতে ঝটিকা মিছিল করার ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছে ছাত্রশিবিরের রংপুর মহানগর শাখা। নগরীর বাহিরে বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জে বিএনপি নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে ঝটিকা মিছিল করেছে।
এদিকে সকাল থেকে অনেকটাই প্রভাবহীন এ হরতালে স্বাভাবিক ছিল জীবনযাত্রা। নগরীর সড়কেই সব ধরনের হালকা যানবাহন চলাচল করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতের কার্যক্রমও ছিল স্বাভাবিক।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর দোকানপাট ও বিপণিবিতানগুলো খুলতে দেখে গেছে। যাত্রী সংকটে রংপুর কেন্দ্রীয় সিটি বাস টার্মিনাল থেকে আন্তঃজেলা রুটে বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। সেই সঙ্গে কামারপাড়া ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। তবে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
রোববার সকাল দশটায় নগরীর বিভিন্ন সড়ক হয়ে রংপুরে ঢুকে পড়া ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো কামারপাড়া বাস স্ট্যান্ডে যেতে দেখা যায় এছাড়া আন্তঃজেলা রুটে বাস চলতে দেখা না গেলেও ট্রাক, মাইক্রো, অটোবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনো পিকেটিং দেখা যায়নি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রংপুর মহানগরী ছাড়াও উপজেলা শহরে এবং গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে পুলিশের নিরাপত্তা জোরদান করা হয়েছে। এছাড়া সাদা পোশাকে রয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাবের টহল।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান জানান, হরতালে যাতে কেউ কোনো ধরনের নাশকতা করতে না পারে সেজন্য পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক ছিল। বিএনপির কার্যালয় এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনার সময় মহানগর বিএনপির আহবায়ক-সদস্য সচিবসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও নগরীতে আরোও ১৪জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বলেন, আন্তঃজেলাসহ সব রুটেই গাড়ি চলাচল করার সিদ্ধান্ত ছিল। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ করেনি। তবে যাত্রী সংকট ছিল।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী বলেন, হরতালে মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। এর পরও শহর ও মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। এদিকে রোববার নগরীতে হরতাল বিরোধী শান্তি সমাবেশ করেছে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। এসময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্তিত ছিলেন।