পীরগঞ্জে কয়েক যুগ পরে বিলের তলা থেকে আমন ধান চাষিদের গোলায় উঠছে

পীরগঞ্জ (রংপুর )প্রতিনিধিঃ
রংপুরের বিএমডিএ মেগা প্রকল্পের অধীনে নদী খননের মাধ্যমে কৃষকের স্বস্তি ফিরেছে। নিচু ও জলাশয় এলাকায় আমন মৌসুমে ব্যাপক হারে ধানের চাষাবাদ করা হচ্ছে। ফসল চাষিদের স্বপ্ন পুরোন হতে যাচ্ছে।
বিএমডিএ পীরগঞ্জ উপজেলা জোন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৮ টি বিলে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। হাজারো কৃষকের চিন্তা দূর করে বিলের নিচু জমিগুতে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। অনেকেই আগাম জাতের পাকা ধান ঘরে উঠাতে শুরু করেছে।
গত সোমবার সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে কথা হয় ধান চাষি মিঠাপুকুর উপজেলার হযরতপুর গ্রামের কায়েম মিয়া ও দুদু মিয়ার সাথে তারা বলছেন, শানেরহাট এলাকার ফলেয়া বিলে তাদের ১০ একর জমি রয়েছে। কয়েক যুগ ধরে এই এসব জমি থেকে দুই মুঠো ধান ঘরে উঠাতে পারেনি। জমি গুলোতে আবাদ না পেয়ে গরিবী অবস্থায় দিন কাটছিল এমনকি প্রতিবছর ঋণের ঘানি টানতে টানতে মাথায় বোঝা হয়ে দাড়িয়ে ছিল। জলাবদ্ধতার কারণে তাদের জমি গুলো অনাবাদি হয়েছিল। বছরে দুটি হিসাবের আবাদ আর সেই আবাদ জলাবদ্ধতা চুরমার করে দিত। নলেয়া নদী খননের ফলে তাদের এলাকার শান,মরা শান,মোলামী, মুগদামী, শগ্নে, ফেলেয়া,গুড়গুড়ি,মেষ্টা, শিমুলিয়াসহ কয়েকটি বিলের জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং জলাবদ্ধতার পানি এবছর নলেয়া নদী গিলে খেয়েছে। যে কারনে তাদের নিচু জমিতে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
মেষ্টা গ্রামের রাজু মিয়া বলেন, মরা নলেয়া নদী কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের অভাব দূর করে দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারনে শান নদীর এলাকায় নিচু জমিতে কৃষি ফসল না পেয়ে অনেকেই ঢাকা মুখি হয়েছিল। এবছর আমন মৌসুমের শেষ নাগাদ যে হারে পানির চাপ ছিল, নদীটি খনন করা না হলে এবছরও তাদের ধান ঘরে উঠাতে পারতো না। নলেয়া নদী এবার উজানের পানি গিলে খেয়েছে তাই তাদের ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা মুখি কৃষক এখন গ্রামের এসে চাষাবাদে করবে।
শানেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান মেছবাহুর রহমান বলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ) কৃষকের স্বপ্ন ফিরিয়ে দিয়েছে। এই নদী খননের ফলে জলাবদ্ধতা দূর করে হাজার হাজার কৃষকের অনাবাদি জমিতে এবার ধানে ধানে ভরে গেছে মাঠ। প্রতিটি জমিতেই আমন ধানের বাম্পার ফলনের আসা করা যাচ্ছে । চাষিরা আনন্দে অগ্রহায়ণ মাসে নবান্ন উৎসবের মাধ্যমে ধান কাটা মারা শুরু করবে।
বিএমডিএ এর রংপুর সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান খান বলেন, নলেয়া নদী পুনঃ খননের ফলে পীরগঞ্জে ধানসহ সকল কৃষি ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। বিশেষ করে কিছু বিলে জলাবদ্ধতার কারনে কৃষি ফসল পানির নিচে ডুবে থাকতো সেখান থেকে চাষিরা ফসল ঘরে উঠাতে পারতো না। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ (বিএমডিএ) মরা নদী খননের ফলে কৃষক শোনার ফসল বুনে যাচ্ছে এবং অই অঞ্চলে ফসল উৎপাদন বেড়েছে।