৭ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২০ এপ্রিল, ২০২৪ - 20 April, 2024
amader protidin

নারী শ্রমিকেই ভরসা উত্তরের কৃষি

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
132


 

নির্মল রায়,গঙ্গাচড়া (রংপুর):

বাবা তোমরা সরকারক কহেন তো হামরাগুলা পুরুষের সাথে সমান তালে কাজ কারি পাই ২০০ টাকা। আর পুরুষগুলা পায় ৫০০ টাকা, হামরা কি ওমারগুলার থাকি কম কাম (কাজ) করি । ওরাও আইসে বিহানে (সকালে) হারাগুলাও আসি বিহানে তাহলে ওরাপায় ৫০০ টাকা। হামরাগুলা পাই ২০০ টাকা।সোমবার (৯ জানুয়ারী)  সকালে ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করার সময় কথা হয়, রংপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের বিরো বালার সাথে। তিনি আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন ।

উপজেলাটিতে নারী শ্রমিকরা এখনো তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত । এই উপজেলার শত শত নারী শ্রমিক কৃষি ক্ষেত্রে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা সারাদিন কাজ করে মজুরি পান ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। একই কাজ নারী কৃষি শ্রমিকরা পাচ্ছেন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। মাঠে কাজ করার ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকের চাহিদা থাকলেও মজুরির সময় ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না তাঁরা।

উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ঘুরে প্রায় শতাধিক নারী শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় বেশি কাজ করেও প্রতি নিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। জীবিকার তাগিদে কর্মক্ষেত্রে মজুরিবৈষম্য মেনে নিয়েই কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। ঘরের কাজ সেরে বাইরের কাজে শরিক হচ্ছেন তারা।

এভাবে পুরুষের পাশাপাশি সংসারে আর্থিক সহায়তা দিতে অবদান রাখছেন এই নারীরা। অন্যদিকে বেশিরভাগ নারী কৃষি কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলেও কৃষক হিসেবে আজও মেলেনি নারীদের স্বীকৃতি।

কোলকোন্দ  ইউনিয়নের বাবুপাড়া  গ্রামের আরতী রানী  বলেন, পুরুষ মানুষ গেরোস্তোর (মালিক) বাড়িত একবেলা খেয়া ৪৫০/৫০০ টাকা পায়। হামরা সমান কাম করিয়াও নিজের বাড়িত খেয়া ১৮০/২০০ টাকা পাই। এই টাকা দিয়ে ছওয়া পোয়াক নিয়ে সংসার চালানো খুব কঠিন,। এখন বাজারে জিনিসপত্রের যে দাম তাতে হামারগুলার টিকি থাকায় টাপ হয়া গেইছে। সকার খালি টিভিত কহে নারী পুরুষ সমান অধিকার। তোমরাই কহেন তো আসলে কি নারী-পুরুষ সমান অধিকার দিয়েছে সরকার । সরকার যদি হামারগুলার কাগজ-কলমে অধিকার না দিয়া বাস্তবে অধিকার বাড়াইল হয় তাহলে হামারগুলার এতো কষ্ট হইল না হয়।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মৌসুমী আখতার বলেন, আমরা নারীদের অধিকারের কথা বিভিন্ন সভা-সেমিনারে তুলে ধরি। যেহেতু আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। তাই আমাদের নারী বৈষম্য দূর করতে সর্বস্তরের মানুষ যদি আমরা এক হয়ে কাজ করি তাহলে নারী বৈষম্য দূর করা সম্ভব বলে মনে করছি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়