৬ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ - 19 April, 2024
amader protidin

ফুলবাড়ী সীমান্তে দরবেশ কছিম উদ্দিনের মাজার জিয়ারত বিএসএফের সশস্ত্র অবস্থা

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
26


 

আব্দুল আজিজ মজনু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তের ওপারে দরবেশ কছিম উদ্দিনের মাজার জিয়ারত উপলক্ষে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি বাহিনী সীমান্তের ৫০ গজের ভেতর কাঁটাতরের বেষ্টনি তৈরী করে সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছে। এছাড়াও ভারতীয় অংশের জিরো পয়েন্টে সীমান্ত ঘেঁসে বিএসএফ, বিশেষ কমান্ড বাহিনী ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের শতশত সদস্য ভারি অস্ত্র নিয়ে টহল দিতে দেখা গেছে। অপরদিকে বাংলাদেশ অংশে বিজিবি সতর্ক পাহারা বসিয়েছে। সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা প্রয়োজন ছাড়া বেড় হচ্ছেন না।

সীমান্তবাসী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুটিচন্দ্রখানা গ্রামের নকরজান সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলাধীন দিনহাটার ৯৪১ এর সাব পিলার ১ থেকে ৫নং পিলারের নিকট মনাইটারী সেউটি-২ গ্রামের জিরো লাইনে প্রায় ২শত বছর পূর্বে আরব দেশ থেকে আসা দরবেশ কছিম উদ্দিন এ এলাকায় ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য আস্তানা গাড়েন। সেখানেই তিনি মৃত্যু বরণ করলে তাকে সেখানে কবরস্থ করা হয়। তার মৃত্যুর পর সীমান্তের দু’পাড়ের লোকজন প্রতিবছর ১০ জনুয়ারী তার মৃুত্য দিবস উপলক্ষে ওরশ মোবারকের সঙ্গে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল উপলক্ষে বিশাল লোক সমাবেশ করে আসছিল। এখানে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্ত এলাকার বসবাসকারীরা তাদের যৌথ আয়োজনে ওরশটি করে থাকে। এ অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটে। মূলত ধর্মীয় দৃষ্ঠি কোনের মধ্যদিয়ে দু’দেশের আত্মীয় স্বজনের মহামিলনে পরিনত হয় অনুষ্ঠানটি। কিন্তু সীমান্ত এলাকাটির মধ্যে দরবেশ কছিম উদ্দিনের মাজার থাকায় এবং এটি ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রনে হওয়ায় অনুমতি না থাকার কারণে বিএসএফ ওই ওরশ মোবারক ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। ৮ জানুয়ারীর গভীর রাতে বিএসএফ ভারতীয় লোকজনের সহায়তায় দরবেশের মাজার নিয়ন্ত্রনে নিয়ে কাটাঁতারে বেড়া পেছিয়ে সবুজ রঙ্গের কাপড় দিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। এরপর বিএসএফ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ৫০ গজের ভেতর ভারি অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরী করে টহল জোরদার করে। যাহা সীমান্তবাসীদের মধ্যে আতংকের সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও ভারতীয় অংশের ভোনাতপুর, সেউটি-২, বশকোঠাল, শুকারুরকুটি, ধাপরারহাট, কুর্শারহাট পর্যন্ত এলাকায় বিএসএফসহ কমান্ড বাহিনী ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের শতশত সদস্য সশস্ত্র অবস্থায় টহল দিতে দেখা যায়। অন্যদিকে বাংলাদেশ অংশে বিজিবি সশস্ত্র অবস্থায় সতর্ক পাহারা দিতে দেখা যায়।

সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আশরাফুল ও শাহিন জানান, তারা বাপ দাদার আমল থেকে এই ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে এসেছিলেন। কিন্ত আইনি জটিলতার কারণে দু’দেশের মানুষের মিলন মেলা হয় নাই। আমরা চেয়েছিলাম দু’দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে যদি এটি হতো তাহলে সীমান্তের নিকট যাদের আত্মীয় স্বজন রয়েছে তারা অনায়সে তাদের ভাবের বিনিময় করতে পারতো। ওরশে এসে দরবেশের মাজারে দোয়া ও মিলাদ পড়তে পারতেন। কিন্ত বিএসএফ শুধুমাত্র ভারতীয়দের জন্য জিয়ারতের পার্মিশন দিয়েছে।

কুটিচন্দ্রখানা নকরজন এলাকার তাজ উদ্দিন ও আশকারুল মিয়া জানালেন, রাতের অন্ধকারে বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র ৫০ গজের ভেতর দরবেশ কছিম উদ্দিনের মাজারটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছে। তাছাড়াও বিএসএফ জিরো লাইনে সশস্ত্র অবস্থায় টহল জোরদার করায় মানুষের মাঝে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের গংগারহাট সীমান্ত ফাঁড়ির টহলরত হাবিলদার মজিবুর রহমান জানালেন, আমরা সীমান্তে আমাদের টহল জোরদার রেখেছি। যেকোন ধরণের অপতৎপরতা রুখতে আমরা বদ্ধপরিকর।

 

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়