১২ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ - 25 April, 2024
amader protidin

রোজিনা বেগমের কেউ নেই দাবি শুধু একটি সরকারি ঘরের

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
275


নীলফামারী প্রতিনিধি:

‘মোর কাহো নাই, এই ঠান্ডাত মুই একাই থাকোং এটে। পানি নাই, খাওয়া নাই। মরি পড়ি থাকলেও কাহো দেখির আইসে না। বাইশ্যা আসলে মোর থাকার জায়গা নাই। চালা থাকি বেড়াইলে দিঘিত পড়ি যাং। সরকার বেলে সবাকে ঘর দেয়ছে, মোকো একটা ঘর দেউক আল্লাহ, কবুল করুক, আল্লাহ কবুল করুক।’ কথাগুলো বলছিলেন নীলফামারী কলেজ রেলস্টেশনের পাশে একটি পুকুরের ধারে বাঁশঝাড়ে ছোট টিনের চালায় বসবাস করা মৃত মোজাম্মেল হকের স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব রোজিনা বেগম। ছেলে সন্তান নেই। একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কয়েক বছর আগে। রোজিনা বেগমের স্বামী মারা গেছেন প্রায় ১০ বছর আগে। এমন অবস্থায় সারাদিন ভিক্ষা করে কোনো রকমে চলেন তিনি। আর রাতে এসে পুকুর ধারে ছোট চালায় একা থাকেন।

স্থানীয়রা জানান, মাঝে মাঝে রোজিনা বেগমের মেয়ে এসে খোঁজ নিলেও সারা বছর খুব ঝুঁকি নিয়েই পুকুর ধারে থাকেন তিনি। কোনো বিপদ কিংবা অসুস্থতায় পড়লে কোনোভাবেই কারো জানার উপায় নেই। বর্ষায় চালা থেকে বের হওয়ার সময় পানিতে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার।

এমন অবস্থায় একটি নিরাপদ বাসস্থান প্রয়োজন ভূমিহীন রোজিনা বেগমের। অসহায় এই বৃদ্ধাকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

হাড়োয়া এলাকার জিকরুল ইসলাম বলেন, চাচি (রোজিনা বেগম) এখানে কয়েক বছর ধরে আছেন। উনারতো কেউ নাই, জমি জায়গাও নেই। সারাদিন ভিক্ষা করে বাইরে খান আর রাতে এসে এখানে ঘুমান। এমন অবস্থায় যদি তিনি অসুস্থ বা কোনো বিপদে পড়েন কেউ জানতেও পারবে না। এক প্রকার ঝুঁকি নিয়েই তিনি এখানে থাকেন। যদি সরকারিভাবে উনাকে কোনো ঠিকানা দেওয়া যায় হয়ত শেষ বয়সটা উনি একটু শান্তিতে থাকতেন।

রোজিনা বেগমের মেয়ে পেয়ারি বেগম বলেন, আমার বাবা মারা যাওয়ার প্রায় ১০ বছরের বেশি হচ্ছে। আমার বিয়ে হয়েছে ৫ বছর। তখন থেকে মা একা থাকে। আমি মাঝে মাঝে নিয়ে গিয়ে রাখি। তবে স্বামীর বাড়িতে কি সেভাবে রাখা যায়? আমার মাকে যদি কোনোভাবে একটা নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেন তাহলে খুব ভালো হয়। আমি তো দূরে থাকি যদি কিছু হয় দেখারতো কেউ নেই, মারা গেলেও কেউ জানবে না।

নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, তিনি যদি আবেদন করেন। আমরা যাচাই বাছাই করে অবশ্যই আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসব। তিনি ভূমি অফিস অথবা সরাসরি উপজেলায় যোগাযোগ করলেও হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়