১৫ চৈত্র, ১৪৩০ - ২৯ মার্চ, ২০২৪ - 29 March, 2024
amader protidin

হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন ডোমারের জয়নাল ও সোহানা দম্পতি

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
50


মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু, ডোমার নীলফামারী প্রতিনিধিঃ

হাঁস পালন করে স্বাবলস্বী হয়েছেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের গোঁসাইগঞ্জ আনন্দ বাজার এলাকার জয়নাল ও সোহানা দম্পতি। জয়নাল আবেদীন উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের গোসাইগঞ্জ আনন্দ বাজার এলাকার সমর আলীর ছেলে।

তারা তাদের নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিয়ে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে আজ সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাঁস পালনের উদ্যোগ নেয় জয়নাল আবেদীন। বাবার সংসারের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে হাঁস পালন শুরু করে নিজেকে আজ স্বাবলম্বী করতে পেরেছেন। তার এই প্রচেষ্টা দেখে বাড়তি আয়ের আশায় এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন হাঁস পালনে। ২০১৬ সালে কৃষি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বেকারত্ব জীবন নিয়ে চাকুরীর জন্য বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরতে ঘুরতে দিশেহারা হয়ে পড়েন।তার দিশেহারা অবস্থা রোধ করতে জয়নালের স্ত্রী সোহানা তার পার্শ্বে দাড়ান, তারা দুজন মিলে আলোচনা করে ডোমার উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তার পরামর্শে ২০১৮ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৩ মাস মেয়াদী কোর্সে হাঁস, মুরগি ও গাভি পালনের উপরে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

প্রশিক্ষণ শেষে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে বিভিন্ন প্রজাতির ২শত হাঁসের বাচ্চা দিয়েই সর্ব প্রথম হাঁস পালনের খামার গড়ে যাত্রা শুরু করে জয়নাল।বর্তমানে জয়নালের খামারে চিনা হাঁস, বেইজিং, রুপালী, খাকি ক্যামবেল হাঁসসহ প্রায় ২ হাজার ৫ শত টি হাঁস রয়েছে তার খামারে। এই হাঁস গুলো প্রতিনিয়ত ডিম দিচ্ছে প্রতিদিন তিনি ২২ হাজার টাকার বেশী হাঁসের ডিম বিক্রি করেন। সব মিলে তার খামারে বর্তমানে ১৫ লক্ষ টাকার হাঁস রয়েছে বলে জানিয়েছেন জয়লান আবেদীন। হাঁসের খাদ্য তৈরী, ডিম সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বাঁচ্চা ফুটানোর মেশিন পর্যন্ত নিজে কিনে তা পরিচালনা করেন। এছাড়াও জয়নালের প্রতিটি কাজেকর্মে সার্বিক ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন জয়নালের স্ত্রী সোহানা আক্তার। স্বামী স্ত্রী মিলে দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে সমাজে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। পাশাপাশি খামারটি দেখাশুনা করার জন্য এলাকার ৩ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে সেখানে। জয়নালের হাঁসের খামারে প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখছেন উপজেলা যুবউন্নয়ন কর্মকর্তা আবুল কাশেম এবং সহাকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এএসএম হাবিব মর্তুজা। অপরদিকে হাঁসের রোগ বালাইয়ের জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক সরেজমিনে গিয়ে খামারটি তদারকি করে প্রয়োজনীয় ভেকসিনসহ চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে উদ্যোক্তা জয়নাল আবেদীন জানান, বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে যখন আমি দিশেহারা, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আমার এই পথচলা। আর এই কজে অনুপ্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছে আমার সহধর্মনী সোহানা আক্তার। সরকারীভাবে সহায়তা পেলে আগামীতে হাঁসের খামারের পাশাপাশি  গরু-ছাগল, মৎস্য, পোল্ট্রি ও কবুতর পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। ইতোমধ্যে গরুর খামারের কাজ চলছে। এবিষয়ে জয়নালের স্ত্রী সোহানা আক্তার বলেন, আমরা দুজন কঠোর পরিশ্রম করে আজ আলোর মুখ দেখতে পেয়েছি এবং সফলতা অর্জন করেছি। তাকে এই কাজে সহযোগিতা করতে পেরে আজ আমি নিজেকে গর্ববোধ করার পাশাপাশি আনন্দিত।

এবিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান, জয়নাল আবেদীন একজন সফল খামারি। প্রাণীসম্পদ বিভাগ থেকে তার খামারের ভেকসিন, ওষুধসহ সব ধরণের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।তিনি আরও বলেন বেকার হয়ে ঘরে বসে না থেকে জয়নালের মতো উদ্যোগ নিয়ে হাঁস মুরগি পালন করে দেশে প্রোট্রিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। তার এই খামার দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়