৫ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ - 19 April, 2024
amader protidin

ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
58


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রকোপ বাড়ার কারণে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিদিন ধারণক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। চিকিৎসা দিতে ডাক্তার-নার্সদের হিমশিম অবস্থা। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল ২৫০ শয্যার কিন্তু দৈনিক ভর্তি থাকছেন ৩৫০ থেকে প্রায় ৪০০ জন রোগী। হাড় কাঁপানো শীতে জেলার সব বয়সের মানুষের শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। বড়দের পাশাপাশি বিশেষ করে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুরা। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেকে হাসপাতালে মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বুধবার জেলার আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা য়ায় এমন দৃশ্য।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক হাসপাতালে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলা থেকে ফারুক ইসলাম ও তার স্ত্রী এসেছেন ১৫ মাস বয়সী শিশুকে নিয়ে। ফারুক ইসলাম আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে বেশ কয়েকদিন থেকে বাচ্চাটা অসুস্থ। ১৫ জানুয়ারি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করি। এখন কিছুটা সুস্থ।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়ন থেকে অসুস্থতার জন্য শাহিনা তার ১৫ দিন বয়সি কন্যা খাদিজাকে ভর্তি করান। তিনি আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি কাশি-সর্দিতে আক্রান্ত ও আমার কন্যা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। গত ১০ জানুয়ারিতে হাসপাতলে শিশু ওয়ার্ডে তাকে ভর্তি করি কিন্তু রোগীর অতিরিক্ত চাপ থাকায় বেড পাইনি। তাই মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।’  দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার গণপূর্ত গ্রামের সাজেদুল করিম আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, আমার আড়াই মাসের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দিক। ঠান্ডার কারণে সর্দি ও এলার্জি রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে দুইদিন থেকে ভর্তি আছি।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের শাহানাজ পারভিন নামে এক গৃহবধু আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আমার ছেলেকে নিয়ে। আগে যদিও শুনেছি এখানকার অব্যবস্থাপনার কথা। তবে এখন আগের থেকে এখানকার চিকিৎসা অনেক ভালো ও উন্নত হয়েছে। তার পরেও এখানে বেডের সমস্যা রয়েই গেছে। বেডের অভাবে অনেক রোগীকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। যদি বেডের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হতো তাহলে আমাদের জন্য আরও ভালো হতো।’

হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. সাজ্জাত হায়দার শহিন আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘এই এলাকায় প্রচণ্ড শীত হওয়াতে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের এখানে শিশু ওয়ার্ডে বেডের সংখ্যা ৪৫ জনের হলেও বর্তমানে প্রতিদিন দুই শতাধিক শিশু ভর্তি থাকছে। এদের মধ্যে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা অধিক। শীতের সময় বিশেষ করে শিশু ও নবজাতকের ঠিকমতো যত্ন না নেওয়ার ফলে এধরণের সমস্যা হয়ে থাকে। তাই শীতে গরমকাপড়ের ব্যবহার বৃদ্ধিসহ শিশুদের বাড়তি যত্ন নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’

আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নাঈম মো. মিনহাজ কৌশিক আমাদের প্রতিদিনকে বলেন, ‘হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতা ২৫০ জনের হলেও বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ থেকে ৪০০ জন রোগী ভর্তি থাকছেন। এদের বেশির ভাগ রোগী ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ডাক্তার ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে জনবল সংকট থাকার কারণে। আগে ১০০ শয্যার হাসপতালে যে জনবল ছিল এখন এটি ২৫০ শয্যায় উন্নিত হলেও শুধু কিছু সংখ্যক আউটসোর্সিং জনবল বাড়িয়ে এখানকার কার্যক্রম চলছে। জনবলের ঘাটতি থাকা সত্তেও এবং শীতে অতিরিক্ত রোগীর চাপেও এখানকার চিকিৎসাব্যবস্থা স্বাভাবিক আছে। সীমিত সামর্থের মধ্যেই আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়