৬ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ - 19 April, 2024
amader protidin

বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে চিন্তায় কৃষক

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
130


নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঘন কুয়াশা ও শীতে বোরো বীজতলা ও আলুর আবাদ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন রংপুর অঞ্চলের কৃষক। চারা রোপণের আগেই শীত ও কুয়াশা বীজতলার জন্য হুমকি হয়ে পড়েছে। অনেকে পলিথিন দিয়ে বীজ তলা ঢেকে তা রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। প্রায় একই আবস্থা হয়েছে আলুর ক্ষেত্রে। বৈরী আবহাওয়ায়  আলু ক্ষেতে পচন রোগে আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষি অফিস বলছে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বোরো মৌসুমে চারা রোপনসহ বোরো ধানের বীজতলা তৈরির ধুম পড়েছে। অনেকে রবি ফসল হিসেবে চাষ করা সরিষা, আলু, গম ও তামাক উত্তোলনের পর ওই জমিতে বোরো আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সে জন্য কৃষকরা বীজতলা তৈরি করছেন। কিন্তু কুয়াশাসহ আবহাওয়ার বৈরি আচরণে তাদের চিন্তিত করে তুলেছে। তাই বীজতলা রক্ষায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী রাতের বেলা কেউ কেউ বীজতলা পানিতে ডুবিয়ে রাখছেন, পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছেন কেউ কেউ। আবার কেউবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করে চারা রক্ষার চেষ্টা করছেন।

এদিকে কুয়াশাজনিত কারণে আলুর আবাদ নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা। কাউনিয়া উপজেলার বিজলের ঘুন্টি এলাকার আফজাল হোসেনসহ কয়েকজন কৃষক জানান, ঘন কুয়াশার পর রোদ উঠলে আলু খেতে পচন রোগের শঙ্কা রয়েছে। তাদের আলুর বয়স দেড় থেকে প্রায় দুই মাস হয়েছে। এই অবস্থায় পচন রোগ হলে ক্ষতি সামাল দেয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে বলে তারা মনে করছেন।

রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় চলতি মৌসুমে এক লাখ হেক্টরের বেশি জমিতে আলুর আবাদ হচ্ছে। কিছুটা বৈরী আবহাওয়ার কারণে কৃষকরাও নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে  খেত পরিচর্যায়  নেমে পড়েছেন। আগাম আলুতে  খুব একটা লাভ করতে পারেননি আলু চাষিরা। বাড়তি খরচের বোঝা নিয়ে আলু চাষ হলেও কুয়াশার বিষয়টি আবারও দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়েছে কৃষকদের। ঠান্ডা আবহাওয়া আলু চাষের জন্য উপকারিতা হলেও কুয়াশা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যে কারণে গত কয়েকদিনের শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উদ্বিগ্ন কৃষকরা।

এদিকে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার  আবুল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, বীজ তলার বয়স ৪০ থেকে ৪৫ দিন হলে তা জমিতে রোপণ করা হয়। এক দোন (২৪ শতক) জমির জন্য চারা কিনতে দাম পড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। বীজতলা নষ্ট হলে দাম আরও বেড়ে যাবে। তাই জমিতে রোপণ না করা পর্যন্ত বীজতলায় চারার পরিচর্যা অব্যাহত রাখছেন। প্রায় একই ধরণের দুঃশ্চিন্তার কথা বললেন পীরগাছা উপজেলার কল্যানি ইউনিয়নের বোরো চাষি নজরুল ইসলাম বুলবুলসহ আরও কয়েকজন।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর  অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলা নীলফামারী, রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় প্রায় ৬ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য এক হেক্টর জমির বীজতলা দিয়ে ২০ হেক্টরে চারা লাগানো যায়।  তাই কমপক্ষে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বীজতলা করা প্রয়োজন।এদিকে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ থেকে  রংপুর অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, বর্তমান যে আবহাওয়া বিরাজ করছে  সেটি মাথায় রেখে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়