১৪ চৈত্র, ১৪৩০ - ২৯ মার্চ, ২০২৪ - 29 March, 2024
amader protidin

শতাধিক কবর কেটে পুকুর তৈরি: আদালতে মামলা

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
529


দিনাজপুর প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় শতাধিক কবর কাটার অভিযোগে মামলা করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার ৭ নম্বর শিবনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর (পুরাতন বন্দর) এলাকায় নুরপুর মৌজায় শতবর্ষের পুরনো কবরস্থানের শতাধিক কবর কেটে ফেলার অভিযোগ তুলে দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের হয়।

বুধবার বিকেল ৪টায় এলাকাবাসীর পক্ষে মো. অহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মো. মোশারফ হোসেনসহ (মোশা) ছয়জনকে আসামি করে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২৯৫, ২৯৭, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় ফৌজদারি মামলাটি করা হয়, মামলা নম্বর-সিআর ১৯/২৩। মামলার অন্য পাঁচ আসামি হলেন জাহিদুল ইসলাম, ইমন, শাহাদৎ হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম এবং জয়নাল।

মামলার আরজি সূত্রে জানা যায়, বাসুদেবপুর, নুরপুর ও দাদপুর এই তিন গ্রামের একমাত্র কবরস্থান এটি। এখানে এক শ বছরেরও আগে থেকে সর্বসাধারণের কবরস্থান হিসেবে তিন গ্রামের মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করা হয়। কবরস্থানটি নুরপুর মৌজার সাবেক দাগ ১৬৬, হাল দাগ ২৭৫-এ জমির পরিমাণ ২.২০ একর। এসএ খতিয়ান মূলে এর মালিকানা মৃত বছির উদ্দিন মণ্ডলের তিন ছেলে তছির উদ্দিন মÐল, এজার উদ্দিন মÐল ও আফাজ উদ্দিন মণ্ডলের। তাদের মরহুম পিতাসহ তারা গ্রামবাসীকে মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করতে কোনো দিন বাধা দেননি। বর্তমানে তারা তিন ভাইও আর জীবিত নেই। এদের মধ্যে মৃত আফাজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলেরা কবরস্থানের শতাধিক কবর কেটে পুকুর তৈরি করছেন।

জানা গেছে, মৃত আফাজ উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে মোশারফ হোসেনসহ অপর ভাইয়েরা ভেকু মেশিন দিয়ে কবরস্থানের পাড় কাটার সময় এলাকাবাসী বাধা দেয়। এ সময় তারা এলাকাবাসীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করতে থাকেন। দফায় দফায় তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও একপক্ষ উপস্থিত না হওয়া এবং অপর দুই পক্ষ কবরস্থানের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা বললেও এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি। এ কারণে এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও থানা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়। পরে আদালতে মামলা করা হয়।

এর আগে শতাধিক কবর কেটে পুকুর ভরাট করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিন গ্রামের শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করে। মানববন্ধন শেষে লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় ধর্মপ্রাণ মানুষ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

মামলার এক নম্বর আসামি মোশাররফ হোসেনের দাবি, কবর কাটা হয়নি। এলাকাবাসী মিথ্যা অভিযোগ করেছে।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে পরিচালিত ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে কবর কেটে পুকুর ভরাট করা হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে। তিনি তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, পুকুরপাড়টি স্মরণাতীতকাল থেকে গোরস্তান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে।

এদিকে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ফুলবাড়ী থানাকে তদন্তের জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিচারক মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়