৫ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ - 18 April, 2024
amader protidin

হারাগাছে রাস্তার ধারে মুরগির বিষ্ঠার স্তুপ: দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
101


কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের কাউনিয়ায় হারাগাছ ঠাকুরদাস মস্তুরপাড় প্রামে পাকা সড়কের পাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে মুরগির বিষ্ঠা। আর বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। অভিযোগ উঠেছে, নীতিমালা উপেক্ষা করে গ্রামের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় খামারটি স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে পৌরসভার কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসী। তাতেও কোন কাজ হয়নি।

জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে হারাগাছ ঠাকুরদাস মস্তুরপাড় এলাকার রাশেদুল ইসলাম হৃদয় ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পোল্ট্রি ফার্ম স্থাপন করেন। বর্তমানে খামারে প্রায় আড়াই হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। আর মুরগির বিষ্ঠা প্রামবাসীর চলাচলের একমাত্র পাকা রাস্তার ধারে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে রাস্তায় চলাচল করা এবং আশপাশে মানুষের বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।

অথচ নীতিমালা অনুযায়ী, একটি মুরগির খামার স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ও প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং জনগণের ক্ষতি হয় এমন স্থানে খামার স্থাপন করা যাবে না।

গত শনিবার ঠাকুরদাস মস্তুলেরপাড় গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পোল্ট্রি খামার থেকে কিছুটা দুরে পাকা সড়কের পাশে বস্তায় মুরগির বিষ্ঠা পড়ে আছে। বস্তা ছিড়ে মুরগির বিষ্ঠা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এতে তীব্র দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, স্থানীয় এক খামারী সড়কের ধারে ও জনবসতি এলাকাতে মুরগির বিষ্ঠা স্তুপ করে রেখেছেন। দুর্গন্ধযুক্ত মুরগির বিষ্ঠা দিনের পর দিন পড়ে থাকছে। এরপর সুবিধা মতো সময় মাছ চাষিদের কাছে বিক্রির করেন।মুরগির বিষ্ঠার উদ্ভট গন্ধে নাকে-মুখে কাপর চেপে থাকতে হচ্ছে। ঘরের দরজা জানালা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুর্গন্ধের পাশাপাশি এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে নানা রোগব্যাধী।

মস্তুলেরপারের বাসিন্দা গৃহবধূ রেহেনা বলেন, আমার বাড়ির পাশেই খামার। রাস্তার ধারে স্তুপ থাকা বিষ্ঠা থেকে সব সময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। বসবাস করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশুরা।

ওই গ্রামের মোস্তাম মিয়া বলেন, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। চিকিৎসক বলেছে, দুষনমুক্ত এলাকায় থাকতে। কিন্তু মুরগির বিষ্ঠার উদ্ভট গন্ধে নাকে-মুখে কাপর চেপে থাকতে হচ্ছে। ঘরের দরজা জানালা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হচ্ছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা শাহাদত সিরাজী বলেন, আমরা এলাকাবাসী মুরগির খামার বন্ধ হউক এটা চাইনা।তবে মুরগির বিষ্ঠার যাতে গন্ধ না ছড়ায় পরিকল্পিতভাবে রাখা হউক। কিন্তু খামারি এলাকাবাসীর কোন কথা শুনছে না। এ ব্যাপারে পৌর কাউন্সিলরকে অভিযোগ করেছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু কাউন্সিলর কোন কিছু করতে পারে নাই।

আরেক বাসিন্দা জাবেদ মিয়া বলেন, এলাকাবাসীকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত করতে খামারের মালিক রাস্তার ধারে মুরগির বিষ্ঠা স্তুপ করে রেখেছে। খামারটি স্থাপনের ক্ষেত্রে জাতীয় পোলট্রি উন্নয়ন নীতিমালা মানা হয়নি।

হারাগাছ পৌরসভার নয় নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুবর রহমান বলেন, তিনি নিজেই গিয়ে পোল্ট্রি খামারীর মালিককে রাস্তার ধারে স্তুপ করে রাখা মুরগির বিষ্ঠা অপসারণের কথা বরেছিলেন। কিন্তু খামারের মালিক তা মানেননি।

খামারের মালিক রাশেদুল ইসলাম বলেন, রাস্তার ধারে তাদের জমিতে বস্তায় ভরে মুরগির বিষ্ঠা রেখেছেন। বিষ্ঠার দুগন্ধতো হবেই, সেজন্য এলাকাবাসী পুলিশকে ডাকবে। তিনি মুরগির বিষ্ঠা মাছের খামারীদের কাছে বিক্রি করেন । তবে  মুরগির বিষ্ঠা পরিকল্পিত সংরক্ষনে তার কোন ব্যবস্থা নাই।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সিঞ্চিতা রহমান জানান, ঠাকুরদাস মস্তুরপাড় এলাকায় রাশেদুল নামে একটি পোল্ট্রি খামারের মুরগির বিষ্ঠা রাস্তার ধারে স্তুপ করার বিষয়টি শুনছি। সেখানে লোক পাঠানো হয়েছিল। তিনি বলেন, পরিবেশ  অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া খামার স্থাপন হলে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

হারাগাছ ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা ডা: শাম্মী আকতার বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বিষ্ঠার দুর্গন্ধ বাতাসের মাধ্যমে বায়ুদূষণ হয়। এর ফলে মানুষের শ্বাসকষ্ট হয়। এছাড়া ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে।

 

 

 

 

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়