৬ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২০ এপ্রিল, ২০২৪ - 20 April, 2024
amader protidin

তিস্তার চরে চারা রোপণের ধুম

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
636


নির্মল রায়, গঙ্গাচড়া (রংপুর):

তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার চরাঞ্চলে নানা ধরনের  ফসলের চারা রোপণের ধুম পড়েছে।  ভুট্টা, মিষ্টিকুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিস্তা পাড়ের চাষিরা। যারা আগাম চারা রোপণ করেছেন তাদের ফসলের চারা গাছ ইতোমধ্যে কিছুটা লম্বা হয়েছে।

গতকাল সোমবার উপজেলার কোলকোন্দ,গঙ্গাচড়া, লক্ষীটারী ইউনিয়নের চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ায় জেগে ওঠা চরে এখন শুধুই ফসলের সমারোহ। চরাঞ্চলের পলি ও দোআঁশ মাটিতে আমন ধান কাটা শেষে চাষিরা  আলু, গম, ভুট্টা, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, চিনাবাদাম, মিষ্টিকুমড়াসহ নানান জাতের ফসলের চাষাবাদ শুরু করেছেন। এক সময়ের পশুচারণ ভূমি এই তিস্তা পাড়ের চরে এখন বছরজুড়ে  ফলে নানা রকম ফসল। এতে বদলে গেছে চরবাসীর পেশাও। আগে যারা মাছ ধরতেন এখন তারা ফসল চাষি। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, গত কয়েকবছরের ব্যবধানে তিস্তার চরে কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। এখন ১০-১৫ প্রকার ফসলের আবাদ হয়। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে এই তিস্তা চরের ফসল।

চরাঞ্চলের অনেক জমিতে এখন বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। ফলে চরাঞ্চলের মানুষজন এখন দিন দিন স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের তিস্তার চরে প্রায় ১৮শ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষ হয়ে আসছে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালি মাটিতে  ফসলের সমাহার ঘটিয়েছেন চরাঞ্চলের কৃষকরা। এক সময় তিস্তা চরাঞ্চলের মানুষ দারিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করতেন। এই অঞ্চলকে বলা হতো মঙ্গাপীড়িত এলাকা। চরে চাষাবাদ শুরু হওয়ায় পাল্টে গেছে এখানকার জীবনযাত্রা। উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের শেখ হাসিনা সেতু এলাকার বাসিন্দা হরেকৃষ্ণ  বলেন, নদীতে বেশি পানি থাকলে চরে আবাদ করা সমস্যা হয়। পানি কম থাকলে ফসলের ফলন ভালই হয়। গত বছর এক একর জমিতে তিনি ভুট্টা চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এ বছরও তিনি ভুট্টা, পেঁয়াজ, মরিচ চাষ করেছেন।

কোলকোন্দ ইউনিয়নের শিঙ্গীমারী চরের বাসিন্দা, নজরুল (৫৫), মতি মিয়া (৫০),বিসম্বর রায়সহ (৪৫) অনেকে জানান, পাঁচ বছর আগেও তারা অভাবের সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন। এখন তারা তিস্তা নদীর বুকে চাষাবাদ করে সুখের মুখ দেখছেন। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝা গেল, তিস্তার বুক চিরে জেগে ওঠা চরে সবুজের সমারোহে হাসি ফুটেছে। নদীতে পানি না থাকলেও নদীভিত্তিক জীবিকা নির্বাহকারীরাও চাষাবাদ  করে ভালই আছেন।

গঙ্গাচড়া  উপজেলা কৃষি অফিস থেকে চাষিদের বিনামূল্যে বীজ, সার প্রদানসহ তিস্তার চরে ফসল চাষে কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে জানান চাষিরা ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়