১২ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ - 25 April, 2024
amader protidin

ফান্ড সংকটে কারখানা বন্ধ এপেক্স ওয়েভিংয়ের, বাড়ছে শেয়ার দর

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
390


 

ঢাকা অফিস:

পুঁজিবাজারে ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেট থেকে এসএমই বোর্ডে আসা কোম্পানি এপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং মিলস লিমিটেড ফান্ড সংকটের কারণে উৎপাদন বন্ধ হয়ে আছে। বকেয়া বিল পরিশোধ করতে না পারায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে দীর্ঘ দিন যাবত। ফলে দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ লোকসানে থাকা কোম্পানিটি গত ৩০ জুন, ২০২২ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য নো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। 

কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ, ধারাবাহিকভাবে লোকসানে থাকা কোম্পানিটির শেয়ারদর  বাড়ার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বাজার সংশ্লিষ্টরা। কয়েকজন ব্যক্তি কারসাজি করে শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ার দর গত ২৯ জুনে সর্বোচ্চ ৪৮.৬ টাকা পযন্ত উঠেছে। সেখান থেকে কমে বুধবার ২৯ নভেম্বর-২০২২ এ শেয়ার প্রতি দর দাঁড়িয়েছে ২৩.৩০ টাকা। গত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৯ টাকা ৭০ পয়সা। কেন শেয়ার দর বাড়ছে তা জানে না কোম্পানিটি।

তথ্যমতে, সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান (ইপিএস) হয়েছে ১.৭৭  টাকা। আগের বছর লোকসান হয়েছিল ৪.৫২ টাকা।তার আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১.৩০ টাকা।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাপেক্স ওয়েভিংয়ের কোম্পানি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সোনালী নিউজকে বলেন, ‘বকেয়া বিল না দেওয়ায় কারখানার গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়া হয়েছে। এ জন্য আপাতত কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি লাইন সংযোগ পেতে। গত আগস্ট মাসে কিছু দিন আমরা গ্যাস সংযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু গ্যাসের চাপ কম থাকায় উৎপাদন শুরু করা যায়নি। এখন মূলত ফান্ড সংকটের কারণে কারখানা চালু করতে পারছি না। তবে কোম্পানি চেষ্টা করছে চালু করতে।

তথ্য মতে, ১৯৯৫ সালে অ্যাপেক্স ওয়েভিং দেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার ছেড়ে শেয়ারবাজার থেকে ২৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯০ হাজার সংগ্রহ করে। পরবর্তী সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের নিয়মিত লভ্যাংশ না দেওয়ায় ২০০৯ সালের ওটিসি মার্কেটে স্থানান্তরিত হয়।

এরপর দীর্ঘ ১১ বছরের বেশি সময় ধরে কোম্পানিটির ব্যবসায়িক কার্যক্রমে উন্নতি হয়নি। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকার পরও সিকিউরিটিজ আইন যথাযথভাবে পরিপালন করছে না কোম্পানিটি। বরং প্রতিনিয়তই আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

দীর্ঘ এ সময়ের মধ্যে আর্থিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ার পেছনে কোম্পানিটির স্বতন্ত্র পরিচালকসহ পরিচালনা পর্ষদ সদস্যদের ব্যর্থতা রয়েছে বলে মনে করে বিএসইসি। গতবছর নিযন্ত্রক সংস্থা দেশের দুই ষ্টক এক্সচেঞ্জের স্বল্পমূলধনী বা এসএমই বোর্ডে লেনদেনের অনুমোদন দেয়।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, ওটিসি মার্কেটে থাকা বস্ত্র খাতের কোম্পানি এপেক্স উইভিং অ্যান্ড ফিনিশিং। ২০০৬ সালে মালিকানা নিয়ে জটিলতায় পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমান কর্ণধার হারুন অর রশিদ ও বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। শেষ পর্যন্ত তা আদালত অবধি গড়ায়। এরপর রাজনৈতিক অস্থিরতা ও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কোম্পানিটির নতুন প্রকল্পও ভেস্তে যায়।

এসব কারণে ২০০৯ সাল থেকে লোকসান গুনছে কোম্পানিটি। ওই বছরে প্রায় ১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা লোকসান গুনেছে প্রতিষ্ঠানটি। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরেও প্রায় চার কোটি ৭৮ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে কোম্পানিটির।

২০০৯ সাল থেকে এক দশকে এপেক্স উইভিংয়ের লোকসান ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে ২০১০ সালে সর্বোচ্চ ৪৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা লোকসান করেছে। অন্যদিকে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে সর্বনিম্ন দুই কোটি ৪৯ লাখ টাকা লোকসান গুনেছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়