৫ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ - 18 April, 2024
amader protidin

তিন মাসের মধ্যে নভেম্বরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স

আমাদের প্রতিদিন
1 year ago
4K


 

ঢাকা অফিস:

দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের চেয়ে সদ্য সমাপ্ত নভেম্বর মাসে কিছুটা বেড়েছে। আলোচ্য মাসে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নভেম্বরে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১২৮ কোটি ৯৩ লাখ ২০ হাজার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।

অন্যান্য সময়ের মতো এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। নভেম্বরে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার। এরপরেই রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ১০ কোটি ৫৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ১ লাখ ডলার, ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৯ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ মার্কিন ডলার। এরপর রেমিট্যান্স প্রবাহ ওঠানামা করলেও গত অক্টোবরে রেমিট্যান্স আগের ৮ মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম এসেছিল। গত অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। তবে চলতি নভেম্বর শেষে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২১ সালের নভেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে জানায়, বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠান, প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধ পথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর জন্য এভাবে আহ্বান জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে (হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে) পাঠিয়ে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানায়, আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনও অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধপথে বা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন। আরও জানায়, অবৈধ পথে  রেমিট্যান্স প্রেরণের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে প্রমাণ সাপেক্ষে প্রচলিত আইনে বিএফআইইউ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

এ ছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে- বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজীকরণ পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সাথে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স প্রেরণে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে। 

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ  মার্কিন ডলার, আগস্টে এসেছে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার এবং নভেম্বর এসেছে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার।

বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ওই অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ১৮৭ কোটি ১৪ লাখ ডলার, আগস্টে ১৮১ কোটি ১ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ, অক্টোবরে ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ, নভেম্বর ১৫৫ কোটি ৩৭ লাখ এবং ডিসেম্বরে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ, জানুয়ারিতে ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৪৯ কোটি ৪৪ লাখ, মার্চে ১৮৫ কোটি ৯৭ লাখ, এপ্রিলে ২০১ কোটি ৮ লাখ, মে মাসে ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ এবং জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৪ কোটি মার্কিন ডলার। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়