১২ বৈশাখ, ১৪৩১ - ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ - 26 April, 2024
amader protidin

ডোমারে ১৩ হাজার ২শত ১৫ হেক্টর জমির ধান কাটার জন্য ২টি হারভেস্টার মেশিন, ধান কাটা নিয়ে শংকায় কৃষক

আমাদের প্রতিদিন
11 months ago
217


ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ

নীলফামারীর ডোমারে বোরোধান এবং ইরিধান কাটার মৌসুম শুরু হতে চলেছে এরই মধ্যে একদিকে কালবৈশাখীর ছোবল অপরদিকে এলাকার ১৩ হাজার ২শত ১৫ হেক্টর জমির ধান কাটার জন্য শুধু মাত্র ২টি হারভেস্টার মেশিন থাকায় ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে শংকা দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার ২ মে সরেজমিনে বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এবিষয়ে উপজেলার ১০নং হরিণচড়া ইউনিয়নের শেওটগাড়ী গ্রামের কৃষক অহিদুল ইসলাম জানায়, এমনিতেই তো শ্রমিক সংকট আছেই তার উপর কালবৈশাখীর ছোবল তাই বর্তমানে ধান কেটে ঘড়ে তোলা নিয়ে চরম বিপদের মধ্যে আছি। তাছাড়া এক সাথে ধান পাকায় শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক শ্রমিক দক্ষিণ অঞ্চলে ধান কাটতে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। আমাদের এখানে বিঘায় ২০ থেকে ২২ মন ধান হয়। বিঘা প্রতি জমি লিজ (জমি ভাড়া) ৮/৯ হাজার টাকাসহ ধানের উৎপাদন খরচ পড়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার মুল্য ৮ শত টাকা মন হলে ২২ মন ধানের দাম পড়ে ১৭ হাজার ৬০০ টাকা। এই হিসেবে কৃষকদের লোকশান গুনতে হচ্ছে। অন্যান্ন সময় কৃষি শ্রমিক ৪/৫ শত টাকায় হাজিরা পাওয়া যেত আর ইরির সিজনে একজন মানুষের হাজিরা ৯ শত থেকে এক হাজার টাকা পড়ে। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে মাত্র ২টি হারভেষ্টার মেশিন ওই মেশিন দিয়ে ধান কেটে ঘড়ে তোলার আশায় থাকলে আমার আমও যাবে, সালাও যাবে, তাই আমরা কৃষকেরা ভিষণ অবহেলিত?

উপজেলার বামুনিয়া ইউনিয়নের জোড়া দিঘী গ্রামের কৃষক নুর আলম সাবু জানান,এখন কেবল ধান কাটা শুরু হচ্ছে। আরও ১৫ দিন পরে পুরো দমে ধান কাটা শুরু হবে। এখনেই দুরত্বের জমি অনুযায়ী বিঘা প্রতি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা ধান কাটা চলছে। ধান কাটা পুরো মৌসুম ৮ থেকে ১০ দিন চলে। ওই সময় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। আমার নিজের জমি আছে। বিঘায় ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ পড়ে। বিঘায় ধান হয় ২০ থেকে ২২ মন (শুকনা)। এখন কাচাঁ ধান ৮ শত টাকা। শুকনা ৯ শত টাকা। প্রতি মনে ২ শত টাকা লাভ হলেও ২২ মনে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা লাভ। যদি কোন প্রাকৃতিক দূযোর্গ না হয়।

উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের  সবুজ পাড়া গ্রামের কৃষি শ্রমিক আমজাদ হোসেন (৩৫), জামিউল ইসলাম (১৭),আলমগীর হোসেন (২০) জানান, বিঘা প্রতি আমরা ৩২ শত থেকে ৩৫ শত টাকা নিচ্ছি। দুরত্বের উপর নির্ভর করে। দিনে হাজিরা ৭ শত এক হাজার টাকা পড়ে। অন্য সময়ে হাজিরা সাড়ে ৪ শত থেকে ৫ শত টাকা দিন পড়ে।

ডোমার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ধান কাটা টুকটাক শুরু হচ্ছে। ওই ভাবে কৃষি শ্রমিক সংকট নেই। আমি কালকে (সোমবার)ট্রেনে আসলাম।দেখলাম এখানকার শ্রমিক ওই দিকে (দক্ষিণ বংগে) গিয়েছিল এখন ফিরছে। আশা করি, ২৮ ধান বিঘায় ২০ মন ফলবে। এতে উৎপাদন খরচ বিঘায় ১২ হাজার ৮ শত টাকা(জমি ভাড়া বাদে) বিঘায় ২০ মন ধান হলে ২২ হাজার টাকা। বিঘা প্রতি খড় বিক্রি করে আয় হয় ২ হাজার টাকা। বিঘায় মোট আসে ২৪ হাজার টাকা। নিজের জমি হলে ১০/১১ হাজার টাকা লাভ হয়। আর জমি লিজ নিলে ৭/৮ হাজার টাকা লাগে। তাহলে লাভ ২/৩ হাজার টাকা হবে। কৃষকদের আহামরি তেমন একটা লাভ হয় না। উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার ২শত ১৫ হেক্টর জমি আবাদ হয়েছে। আশা করি ফলন ৪৪ হাজার ৯শত ৩০ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয়। এর পাশাপাশি এখানে ২ টি হারভেস্টার মেশিন রয়েছে এবং ২টি  মেশিনই ব্যবহার হচ্ছ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়