৬ বৈশাখ, ১৪৩১ - ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ - 19 April, 2024
amader protidin

কেন্দ্রের বাইরে সদ্যজাত শিশু এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন মা

আমাদের প্রতিদিন
10 months ago
342


বাল্যবিয়ে

হারুন উর রশিদ সোহেল:

রংপুর নগরীতে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে সদ্যজাত দুধের শিশুকে স্বজনদের কাছে পরীক্ষা দিচ্ছে শিশুটির মা বাল্যবিয়ের শিকার সানজিদা আক্তার সুবর্ণা। তিনি চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বাল্য বিয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থী পরীক্ষা চলাকালীন দু’দিন পূর্বে সন্তান প্রসব করেছে। শিশু বয়সেই মা হওয়ার এই ঘটনা রংপুরে এখনো থেমে নেই। গতকাল রোববার(২৮ মে) রংপুর নগরীর কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের প্রধান ফটকের এই ঘটনার চিত্র পাওয়া গেছে।

সেখানে ওই শিশুকে নিয়ে শিশুকে নিয়ে অপেক্ষা করছেন নানি নাজমা বেগম। কারণ  মা সানজিদা আক্তার সুবর্ণা এবার ওই পরীক্ষা কেন্দ্রেই এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। রোববার ছিল তার কৃষি শিক্ষা পরীক্ষা। যখন কোন মায়ের সন্তান প্রবসের পর মায়ের পূর্ণ বিশ্রাম নেয়ার কথা। মানসিক শান্তি নিয়ে ঘরে থাকার কথা তখন বাল্য বিয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থীকে ক্লন্তি, অপুষ্ট ভগ্ন শরীর নিয়ে নিয়ে সদ্যজাত সন্তানকে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে রেখে পরীক্ষা পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

জানাগেছে, নগরীর ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের তালুক তামপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর বিয়ে হয় নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে। সেই ওই এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তার স্বামীর নাম জাহিদ হাসান। পেশায় চাকরিজীবী। তার মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন গত দুই দিন আগে গত ২৬ মে সে সন্তান প্রসব করে। বর্তমানে সদ্য নজজাত শিশু সন্তান নিয়েই ওই শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।

বয়স হওয়ার আগে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার বিষয়ে ওই শিক্ষার্থীর মা নাজমা বেগম বলেন, ‘দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে সানজিদা আক্তার সুবর্ণা বড়। আর ছেলে নীরবের বয়স ১১ বছর। এখন মেয়েদের নিরপত্তার অভাব, তা ছাড়া ছেলে পক্ষের আগ্রহ ছিল তাই আর দেরি করিনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাঝে মাঝে পরীক্ষা কেন্দ্রে ওর মায়ের কাছ থেকে দুধ খাওয়াইয়া নিয়ে আসছি।’ এতে কোন সমস্যা হচ্ছে না। তবে বাল্য বিয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি।

শিক্ষকরা বলছেন, করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ওই সময়ে অনেক শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। তাদের অনেকের কোলজুড়ে সন্তান এসেছে। এজন্য বিশেষ করে অভিভাবক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কাজিরা দায়ী বলে জানান তারা। তারা সচেতন হলে বাল্য বিবাহের প্রবণতা কমবে বলেও শিক্ষকরা জানান।

এব্যাপারে কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আব্দুল ওয়াহেদ মিঞা বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। সরকার যতই বাল্য বিয়ে বন্ধের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নিচ্ছে ততই এই বাল্য বিয়ের প্রবনতা থামছে না। তাই সকলের সমন্বিত উদ্যোগ না হলে বাল্য বিয়ে থামবে না বলেও তিনি জানান।

 

 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়