পীরগঞ্জ(রংপুর)প্রতিনিধিঃ
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এটা আবু সাঈদের বাংলাদেশ। আমরা সবাই আবু সাঈদ। এই বাংলাদেশে কোনো ভেদাভেদ নেই।
শনিবার সকালে হেলিকপ্টারযোগে রংপুরের পীরগঞ্জের মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামে যান তিনি। বেলা ১১টার দিকে আবু সাঈদের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। ড.ইউনূস বলেন, এখানে যারা আছে (আবু সাঈদের পরিবার) তাদের রক্ষা করতে হবে। তার মা আছে, বোনরা আছে, তাদের রক্ষা করতে হবে। আবু সাঈদ এখন এক পরিবারের সন্তান না। বাংলাদেশের যত পরিবার আছে, তাদের সন্তান। যারা বড় হবে, স্কুল-কলেজে পড়বে, তারা আবু সাঈদের কথা জানবে এবং নিজে নিজেই বলবে, আমিও ন্যায়ের জন্য লড়ব। আবু সাঈদ এখন ঘরে ঘরে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই এই মাটিরই সন্তান। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এই মাটির সন্তানদের রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য। আমরা যেন এটা নিশ্চিত করি। তিনি বলেন, 'আবু সাঈদ যেমন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আমাদেরকেও সেভাবে দাঁড়াতে হবে। যারা পার্থক্য করে আমরা তেমন না। আমরা সবাই বাংলাদেশি, আমরা বাংলাদেশেরই সন্তান। আবু সাঈদের মা সবার মা এবং সবার মা আবু সাঈদের মা। কাজেই তাকে রক্ষা করতে হবে, তাদের বোনদের রক্ষা করতে হবে, তাদের ভাইদের রক্ষা করতে হবে। সবাই মিলে এটা করতে হবে। এর আগে সকাল ১০টা ৪২ মিনিটে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জের মেরিন একাডেমিতে পৌঁছান। এরপর তিনি শহীদ আবু সাঈদের বাড়ি অভিমুখে সড়কপথে রওয়ানা হন। সেখানে পৌঁছে ১১টা ৫ মিনিটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেন। পরে স্বজনদের সঙ্গে মিলিত হন। এ সময় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুইয়া সঙ্গে ছিলেন।
এছাড়াও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন, জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসানসহ জেলা ও উপজেলার প্রশাসনের ঊর্দ্ধতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, ড. ইউনূসের আগমন ঘিরে শুক্রবার থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় ওই এলাকায়। সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন। অবশ্য কোন পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। কবর জিয়ারত ও আবু সাঈদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে শেষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন তিনি। এরপর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত রোগীদের দেখতে যাবেন ড. ইউনূস।