৫ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার দেয়ার পর আওয়ামীলীগ ছাড়লেন প্রধান শিক্ষক

আমাদের প্রতিদিন
2024-09-30 08:34:12

সাখাওয়াত হোসেন সাখা, রৌমারী (কুড়িগ্রাম):

কুড়িগ্রামের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী—সমন্বয়কের কাছে স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার দেয়া ৯টি শর্তের মধ্যে ১ নম্বর শর্ত পূরণ করে রাজনীতি ছাড়লেন প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন। তিনি রাজিবপুর মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও চররাজিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক। সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা ঘোষনা করেন তিনি।

এর আগে রোববার (১৮ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন আন্দোলনকারীদের দেওয়া ৯টি শর্তে এবং ৫ টাকার স্ট্যাম্পের অঙ্গীকারনামায় সেচ্ছায় স্বাক্ষর করেন। পরে বিদ্যালয়ে নিয়মমাফিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন প্রধান শিক্ষক।

প্রধান শিক্ষক আজিম উদ্দিন বলেন, ‘২০২২ সালে চররাজিবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের একটি আংশিক কমিটি অনুমোদন করা হয়। ওই কমিটিতে আমাকে যুগ্ন সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়েছিল। যেহেতু এখন চাকুরি সরকারি হয়েছে ২০২৪ সালে সরকারি চাকুরিজীবি থাকা অবস্থায় কোন রাজনৈতিক দলের সাথে থাকার কোন আইনগত অধিকার নাই, বিধিতেও নাই। সে কারণে আমি ইতিপূর্বেও জেলা নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেছি। যে আমি কোন পদে থাকবো না, আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা প্রদান করলাম। তিনি আরও বলেন, শুধু আওয়ামীলীগ না কোন রাজনৈতিক দলে সাথে জড়িত থাকবো না।’

এবিষয়ে চররাজিবপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহমুদুল নবী আকিব বলেন, ৫ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার নামায় আমাদের দেয়া ৯টি শর্তে রাজি হয়ে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর করেছেন। শর্তগুলোর মধ্যে একটি শর্ত ভঙ্গ করলে তাকে সেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে বলে জানান।

ইস্তফা সম্পর্কে জানতে চাইলে চররাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, আজিম উদ্দিনের ইস্তফাপত্র কিংবা পদত্যাগপত্র এখনও হাতে পায়নি। পেলে সে অনুযায়ী জেলা আওয়ামীলীগকে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামায় ৯টি শর্তগুলো হলো—তিনি কোনো প্রকার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত বা রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। সময়মতো শিক্ষকদের ক্লাসে উপস্থিত নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশ উপস্থিতি, ড্রেসকোড এবং আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সরকারি নির্দেশনা ছাড়া ভর্তি ফি, মাসিক ফি, পরীক্ষা ফি, রেজিস্টে্রশন ফি, সার্টিফিকেট নিতে টাকা এবং অতিরিক্ত কোনো অর্থ নেওয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের বার্ষিক সফর, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করতে। প্রতিষ্ঠানে মাদক দমন করবো। অভিভাবক সমাবেশ, বহিরাগত প্রবেশ বন্ধ, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ বাক্স স্থাপন শর্ত জুড়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী।