পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে দেউতি স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক নাহিদ হাসান লিটনের পদত্যাগ ও গ্রেফতারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দেউতি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। নাহিদ হাসান লিটন জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলে জানা গেছে। এছাড়াও দলীয় ও রাজনীতিমুক্ত কলেজের দাবি করে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করলে শিক্ষার্থীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সকাল ১১ টা থেকে দুপুর আড়াই টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। পরে ইউএনওর আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, উপজেলার দেউতি স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক নাহিদ হাসান লিটন গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় এবং মারপিট করে। সে সময়কার ভিডিও ফুটেজে তাকে দেখা গেছে। তিনি জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়াও নাহিদ হাসান লিটন দেউতি এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে কোণঠোসা করে রাখতো। গতকাল বুধবার সকালে শতাধিক শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে আসেন এবং তাদের সাথে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন যোগ দেন। শিক্ষার্থীরা রংপুর—পীরগাছা সড়কের দেউতি স্কুল এন্ড কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় তারা লিটনের পাশাপাশি অধ্যক্ষ এবিএম মিজানুর রহমান সাজুর পদত্যাগ দাবি করলে শিক্ষার্থীরা দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্কুলের গর্ভানিং বডির সভাপতি নাজমুল হক সুমন ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন। এসময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আমিনুল ইসলাম রাঙা ও কলেজের শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সকলে বক্তব্য শুনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কিছু শিক্ষার্থী সড়ক ছাড়তে রাজি হননি। পরে ইউএনও লিখিত আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয়া হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রভাষক নাহিদ হাসান লিটন আবু সাঈদ হত্যার সাথে জড়িত। আমাদের কাছে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তারপর তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কলেজের অধ্যক্ষ এবিএম মিজানুর রহমান সাজুও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক। তাই আমরা তারও পদত্যাগ দাবি করছি।
এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষের পদত্যাগ চাওয়া অযৌক্তিক। তিনি আওয়ামীলীগ করলেও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য নয়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার অধ্যক্ষ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল হক সুমন বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলা হয়েছে। তাদের লিখিত অভিযোগ ও যা যা ডকুমেন্ট আছে দিতে বলা হয়েছে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।