উপজেলা প্রতিনিধি রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ):
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তারাবো পৌর এলাকার রূপসীতে গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৭৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের সন্ধান পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা।
সোমবার (২৬ আগস্ট) বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাজী টায়ার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিখোঁজের তালিকায় ১৭৩ জনের নাম যুক্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (ঢাকা) লে. কর্নেল রেজাউল করিম।
নিখোঁজের স্বজন ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, যাদের পাওয়া যাচ্ছে না তাদের পরিবারের সদস্যরা সকাল থেকে কারখানার সামনে ভিড় করছেন। নিখোঁজরা রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে লুটপাটের সময় কারখানায় ঢোকেন বলে জানা গেছ। স্বজনদের দেওয়া তথ্যমতে, নিখোঁজদের একটি খসড়া তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকায় ১৭৩ জনের নাম যুক্ত হয়েছে।
স্থানীয়দের দাবি, কারখানাটিতে ৪০০-৫০০ মানুষ আটকা পড়েছেন। তারা জীবিত আছেন কি না সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না
স্থানীয় ও কারখানা সূত্র জানায়, শনিবার (২৪ আগস্ট) রাতে গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী ঢাকার শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেফতার হন। রোববার বিকেলে এ খবর খবর ছড়িয়ে পড়ে। এসময় শত শত মানুষ গাজী টায়ার কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে মেশিনপত্র ও আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী লুটপাট করে নিয়ে যেতে শুরু করেন। একপর্যায়ে পাঁচ শতাধিক মানুষ কারখানার ছয়তলা ভবনটির বিভিন্ন ফ্লোরে উঠে পড়েন। সেখান থেকেও লুটপাট শুরু হয়। রাত ৯টার দিকে ভবনের নিচতলায় দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এসময় দোতলা ও তিনতলার জানালা দিয়ে অনেকেই নিচে লাফিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আগুন একে একে পুরো ছয়তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে গেলে ভেতরে আটকে পড়া অনেকেই আর বের হতে পারেননি বলে এলাকাবাসী দাবি করছেন।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (প্রশিক্ষক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, এ মুহূর্তে তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই। স্বজনরা যারা দাবি করছেন তাদের নাম, ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১৭৩ জনের তালিকা পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ভবনের ভেতর থেকে আহত ১৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ভেতরে কী পরিমাণ মানুষ আটকা পড়েছিলেন তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন স্টেশনের ১২টি ইউনিট কাজ করছে জানিয়ে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম বলেন, আমরা টিটিএল মেশিন দিয়ে ওপর থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছি। ছয়তলা ভবনটির বেশিরভাগ ফ্লোরে প্লাস্টিক, রাবার ও কেমিক্যালসহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। যে কারণে এগুলো জ্বলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগুন নেভানো কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে