কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জোবায়ের হোসেন আমিন হত্যাকান্ডে ৪৬ দিন পেরিয়ে গেলেও এজাহারভুক্ত আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় সম্মেলন করে বিচার চেয়েছেন বাবা। বুধবার সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাব চিলমারীর অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করে ছেলে হত্যার বিচার চান তিনি।
নিহত জোবায়ের হোসেন আমিন (১৯) উপজেলার মন্ডল পাড়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে। সে কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
গত ১৯ জুলাই ব্রহ্মপুত্র নদে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর কলেজ ছাত্র জোবায়ের হোসেন আমিনের লাশ ভেসে ওঠে। বিকৃত লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়। কিন্তু মামলা দায়েরের ৪৬দিন পেরিয়ে গেলেও এজাহারভুক্ত আসামী গ্রেফতার হয়নি।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল জলিল আমিন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গত ১৯ জুলাই রাত ১টা হতে রাত ৩ টার মধ্যে যে কোন সময় আমার সর্বকনিষ্ঠ পুত্র জোবায়ের হোসেন আমিনকে হত্যা করে লাশ চিলমারী নৌবন্দরের রমনা ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ পল্টুনের নীচে ফেলে দেয়। পরদিন পুলিশ তার মহদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট করে ময়না তদন্ত শেষে আমার নিকট হস্তান্তর করে।
এর দুইদিন পর ২১ জুলাই চিলমারী মডেল থানায় ফজলুল হকের ছেলে মোঃ সাইনান স্বচ্ছ (২১), ও আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মোঃ ইউসুফ আহম্মেদ জায়েদ (২১) সহ আরো ৬/৭ অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে মামলা দায়ের করি।তিনি আরও বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয় চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সিআই মোঃ নাজমুল হককে। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় এখন পর্যন্ত মামলার কোন আসামী গ্রেফতার করা হয়নি। আসামীদ্বয় আমার নিহত ছেলের সাথে চলাফেরা করতো। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতে পারে। তারই অংশ হিসেবে আমার ছেলেকে গত ১৮ জুলাই রাত ১০টার সময় আমার বাড়ীর সামন থেকে মোটর সাইকেলে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফিরা শেষে চিলমারী বন্দরের রমনা ঘাটে নিয়ে যায়। সেখানে জোবায়ের হোসেন আমিনকে হত্যা করে লাশ চিলমারী নৌবন্দরের রমনা ঘাটের বিআইডব্লিউটিএ পল্টুনের নীচে ফেলে দেয়।
নিহতের বাবা আরও বলেন, মামলার এজাহারে সুনির্দিষ্টভাবে আসামীদের নাম থাকা সত্বেও পুলিশ এখন পর্যন্ত তাদেরকে গ্রেফতার করছেন না। আমি অতি দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আপনাদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে জোড় দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণ কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, আমাদের এখানে মামলা দায়ের হলেও ঘটনাস্থল নৌ থানা এলাকা হওয়ায় মামলা সেখানে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামী ধরতে আমরা নৌ থানাকে সার্বিকভাবে সহযোগীতা করছি।
এ ব্যাপারে চিলমারী নদীবন্দর থানার (ভারপ্রাপ্ত ওসি ) নাজমুল হক জানান, আমরা মামলার এজাহারভুক্ত আসামীদেরকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালাচ্ছি। অতিশীঘ্রই তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়া হবে।