নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সম্প্রতি ভারতীয় সেনাবাহনীর প্রতি যে নির্দেশনা দিয়েছেন তার ব্যাপারে দেশের সার্ভভৌত্ব রক্ষায় সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ্য করেছেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশে জাতীয় স্বার্থে ও স্বার্ভভৌত্ব প্রশ্নের বিদেশি হুমকি মোকাবেলায় সকল রাজনৈতিক দল একটি প্লাটফর্মে সমবেত হয়ে এক সকলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। আমাদের দেশের জাতীয় স্বার্থে সকল মতভেদ ভুলে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা জরুরি হয়ে পড়েছে।
রোববার দুপুরে রংপুর নগরীতে একটি হোটেলে আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ ও সহানুভূতি বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তিনি।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জাতীয় সংগীত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটার তার একান্ত ব্যক্তিগত কথা। তিনি জামায়াতে ইসলামীর সদস্য নন। সুতরাং তিনি জাতীয় সংগীত পরিবর্তন নিয়ে যা বলেছেন তা তার একান্ত ব্যক্তিগত মন্তব্য। এর ব্যাখ্যার দায় জামায়াতে ইসলামীর নয়।
তিনি বলেন, দেশের বিশিষ্ট ৪৮ জন নাগরিকের দেয়া বিবৃতিতে 'জামায়াতে ইসলামীর আমির জাতিকে অতীতের সবকিছু ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন' বলে উল্লেখ করা হলেও জামায়াতের আমির এধরণের কথা বলেনি বলে জানান তিনি। তাই এমন বিবৃতির কোন প্রতিক্রিয়া দেখাবে না জামায়াত যোগ করেন কেন্দ্রীয় এই নেতা।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, দেশের সংস্কার এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রযন্ত্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ফ্যাসিবাদের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। সংবিধানের সংস্কার, ইলেকশন কমিশনের সংস্কার করতে হবে। আমাদের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে গত ১৫ বছরে দলীয়করণ হয়েছিল, সেগুলোর সংস্কার করতে হবে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরের জঞ্জাল পরিস্কার করতে দীর্ঘ সময় লাগবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য সব সংস্কার সম্ভব না হলেও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে যেগুলো করা দরকার, এখন সেটি করাই বড় চ্যালেঞ্জ। প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে মহানগর জামায়াতের আমীর এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন— সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান বেলাল, জামায়াতের জেলা আমীর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, সেক্রেটারী ওবায়দুল্লাহ সালাফী, মহানগর শিবিরের সেক্রেটারী নুরুল হুদাসহ নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনে নিহত পরিবারের সদস্যদের হাতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সহায়তার অর্থ তুলে দেয়া হয়। এসময় নিহত পরিবারের সদস্যসহ জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।