হাবিবুর রহমান, চিলমারী(কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পল্লী বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একদিকে যেমন তীব্র গরম অন্যদিকে তেমনি বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলা। সব মিলিয়ে উপজেলার প্রায় ৫০-৬০ হাজার গ্রাহক চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে বিভিন্ন পেশাজীবি, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ও শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় চরম ব্যাঘাত ঘটিতেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবী চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম সরবরাহ পাওয়ায় কারণে এত লোডশেডিং দিতে হচ্ছে বলে জানান।
জানা গেছে, কুড়িগ্রাম লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির, চিলমারী জোনাল অফিসের আওতায় গোটা উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন মিলে প্রায় ৫০-৬০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। বর্তমানে তীব্র গরমে অসহনীয় বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলা (লোডশেডিং) এর ফলে ব্যবসা-বানিজ্য, অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীরা, বাসাবাড়ী এমনকি কৃষি ক্ষেত্রেও গ্রাহকরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলার পাত্রখাতা এলাকার কৃষক লিয়াকত আলী, সবেদ আলী, সবুজপাড়া এলাকার মিজানুর রহমান, আকসেদ মিয়া, নয়ারহাট ইউনিয়নের মাহফুজার রহমান, আঃ রহমান, কাচকোল বাজারের ব্যবসায়ী শাহীন মিয়া, আলমগীর রহমান, নুর আলম, সখের হাট বাজারের দৌলা মিয়া, নিসু মিয়া, দিপু চন্দ্র, যোগেন্দ্র চন্দ্রসহ অনেকে বলেন, পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায়, এই মৌসুমে জমিতে আমন ধান চাষের জন্য সেচের মাধ্যমে পানি দিতে হচ্ছে।বর্তমানে বিদ্যুতের ঘন ঘন লুকোচুরি খেলা (লোডশেডিংয়ের) কারনে ঠিকমত পানি দিতে পারছি না। জসিম মিয়া, জিএম, শাহীনমিয়াসহ অনেকে বলেন, সন্ধ্যা হলেই দেখা যায় বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলা শুরু হয়ে যায়, বিদ্যুৎ থাকে না এতে শিক্ষার্থীরা তাদের লেখাপড়া ঠিকভাবে করতে পারছে না। বেশকিছু পরিবারে তাৎক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা (আইপিএস) থাকলেও বেশিভাগ বাড়িতে সেটি নেই। যার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া নিয়ে বিঘ্নিত হচ্ছে। কলেজ মোড় এলাকার ব্যবসায়ী রাকু মিয়া বলেন, অনেক গুলো অর্ডার নেয়া আছে, কিন্তু বিদ্যুৎতের লুকোচুরি খেলা (লোডশেডিংয়ের) কারণের সময় মত কাজ বুঝে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ অফিস সুত্রে জানা গেছে, সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের আওতায় বিদ্যুৎ সেবা গ্রহীতা প্রায় ৫০-৬০ হাজার। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ৪৫হাজার ২৪৩জন, বানিজ্যিক ৩হাজার ৭শ’জন এবং আর সেচ আছে ১হাজার ৫৭টি। চিলমারী সাব স্টেশনে বিদ্যুৎ ফিডার রয়েছে ৬টি। এখানে দৈনিক বিদ্যুৎ এর চাহিদা ৯ মেগাওয়াট, কিন্তু সেখানে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে ৩-৪মেগা ওয়াট। যা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেকেরও অনেক কম। চিলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মোস্তফা কামাল বলেন, চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ আমরা পাচ্ছি। গতকাল রাত ১০টার দিকে চাহিদা ছিলো ৮থেকে ৯মেগাওয়াট কিন্তু আমরা বরাদ্দ পেয়েছি মাত্র ৩ মেগাওয়াট। ঐ দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে ৪মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছি যা দিয়ে ৬টি ফিডার চালানো সম্ভব নয় বলে দুইটি ফিডার বন্ধ রাখা হয়েছিলো। তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যার সময় বিদ্যুৎতের চাহিদা অনেক বেশি হয়। এতে করে ঐ সময়ে লোড বেশি পরে। এসময় আমরা চাহিদা মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি না। আবার সকালে দেখা যায় চাপ একদম কমে যায়। তবে স্বাভাবিক সময়ে ৭থেকে সাড়ে সাত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই এ উপজেলায় চাহিদা মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় বলে জানান তিনি।