কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার পুটিমারী মন্ডলপাড়া এলাকার হোসনে আরা (২৭)কে দেবর মিজানুর রহমান লিটন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা এবং হত্যার আলামত বিনস্ট করে। হত্যা মামলা দায়ের কররার ৮ বছর পর বুধবার বিকালে কুড়িগ্রাম অতিরিক্ত দায়রা জজ মো: আব্দুস সালাম আসামী মিজানুর রহমান লিটন (২৬) কে ভাবীকে হত্যার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে এব বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। একই আদেশে হত্যার পর হত্যার আলামত বিনস্ট করার অপরাধে দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। আসামী পলাতক থাকায় আসামীর অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে সংশ্লিস্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর নাজমুল হোসেন জানান, বিগত ০২/০৫/২০১৬সালে সকালে চিলমারী উপজেলার ব্রম্মপুত্র নদের ব্যাঙমারার চরে জনৈক বিজয় বাবুর পতিত জমিতে অজ্ঞাতনামা মহিলার লাশ দেখতে পেয়ে গ্রাম পুলিশ দুলু মিয়া চিলমারী থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে আসামী অজ্ঞাত দেখিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং জিআর—৩৮/১৬(চিলমারী)। পরবর্তীতে পুলিশ ব্যাপক অনুসন্ধান করে এ হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান লিটনকে সনাক্ত করেন। সে চিলমারীর পুটিমারী হাটিথানা মন্ডলপাড়া এলাকার ইয়াকুব আলী মন্ডলের পুত্র। তার বড় ভাই রতন মন্ডলের স্ত্রী হোসনে আরার সাথে পরোকিয়া এবং টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে ঘটনারদিন ভাবী হোসনে আরাকে কেীশলে নৌকায় করে ব্যাঙমারা চরে নিয়ে গিয়ে গলাটিপে এবং ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এ সময় হত্যার আলামত বিনস্ট করে লাশ ফেলেরেখে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের তদন্তে আসামী সণাক্ত করা হয় এবং হত্যা রহস্য উদঘাটন হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আসামি মোঃ মিজানুর রহমান লিটন এর বিরুদ্ধে তার ভাবী হোসনে আরা কে হত্যা এবং হত্যার আলামত ধ্বংসের অভিযোগে চার্জশীট দাখিল করেন। চার্জশীট আসলে মামলাটি বিচারের জন্য জজ আদালতে বদলী হয়। এখানে মামলাটি দায়রা মামলা নং ৪৭/১৮ তে রুপার্তরিত হয়ে বিচার শুরু হয়।
বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করেন। অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত রাষ্ট্রপক্ষ উপস্থাপিত ১৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও জেরা লিপিবদ্ধ করে যুক্তিতর্ক শ্রবণঅন্তে বুধবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করেন। প্রকাশ্য আদালতে রায় ঘোষনায় অতিরিক্ত দায়রা জজ মোঃ আব্দুস সালাম আসামির বিরুদ্ধে হত্যার দায়ে আসামিকে যথাক্রমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১,০০,০০০/—(একলক্ষ) টাকা জরিমানা অনাদায়ে ০১ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং হত্যায় সাক্ষ্য প্রমাণ বিনষ্টের দায়ে ০২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০,০০০/—(দশ হাজার) টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ০১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
আসামীর অনুপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মোঃ নাজমুল ইসলাম এবং আসামিপক্ষে স্টেট ডিফেন্স এডভোকেট জনাব এটিএম এরশাদুল হক চৌধুরী।