আসাদুল ইসলাম, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা):
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে পশ্চিম-দক্ষিণ কোণে বয়ে যাওয়া প্রায় ১০০ মিটার চওড়া এবং ১৫ মিটার গভীর খালের নাম বুড়াইল। কয়েক দশক ধরেই লোকজনকে পারাপার হতে হয় সাঁকো দিয়ে। কিন্তু সেটিও ভেঙে যাওয়ায় পথচারীদের পারাপারে ভরসা এখন ডিঙি। এতে বিপদে পড়তে হয়েছে চার উপজেলার অন্তত ২৫ হাজার মানুষকে। আর যাতায়াতে দূরত্ব বেড়েছে ৩০ কিলোমিটার পথ।
জানা যায়, উপজেলার তারাপুরের ইমামগঞ্জ বাজার থেকে সোজা উত্তর দিকে চলে যাওয়া কাঁচা রাস্তা মাঝখানে থাকা বুড়াইল নামক খালের সাঁকো দিয়ে চলাচল করতেন সুন্দরগঞ্জ, পীরগাছা, উলিপুর, রাজারহাটসহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২৫ হাজার মানুষ। বাহন হিসেবে চলাচল করে বাইসাইকেল, ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। এছাড়া দক্ষিণ পাড়ে থাকা অধিকাংশ কৃষকের ফসলি জমি খালের উত্তরে। উপজেলা সদর কিংবা প্রধান হাটবাজারের অবস্থানও দক্ষিণে। সাঁকোটি না থাকায় উত্তর-দক্ষিণের অধিবাসীদের থমকে গেছে জীবন-জীবিকা। গত বুধবার সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় ভরসা এখন ডিঙি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট্ট একটি নৌকায় পারাপার হতে হচ্ছে পথচারী ও কৃষকদের। ৪-৫ জন উঠলেই ডুবুডুবু করছে ওই ছোট্ট নৌকা। একে তো ছোট্ট নৌকা, তার ওপর স্রোত থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পার হচ্ছেন তারা। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন শিক্ষার্থী, মোটরসাইকেল আরোহী, অটোরিকশা ও ভ্যান চালকরা। সাঁকোটি তাদের আসা-যাওয়ার দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে ৩০ কিলোমিটার পথ।
স্থানীয় শিক্ষক শাহজাহান কিবরিয়া নয়ন, কৃষক আমিনুল ইসলাম ও ডিঙির মাঝি চন্দন দাস বলছেন, 'লাটশালায় তিস্তা পারাপারের ঘাট থাকায় সুন্দরগঞ্জ, মীরগঞ্জ এবং কুড়িগ্রামের উলিপুর, রাজারহাট, থেতরাই, নাগরাকুড়া ও বড়বাড়ি যেতে দিনে প্রায় ২-৩ হাজার লোক এ পথে যাতায়াত করেন। গত বুধবার সাঁকোটি ভেঙে পড়ায় বিপদে পড়েছেন তারা। সবাই ভোটের আগে আশ্বাস দেন, কিন্তু পুল আর হয় না।'
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার মো. শাহালম বলেন, সাঁকোটি নিয়ে খুব বিপদে আছি। প্রতিবছর ওই একই সমস্যা। ব্রিজ নিয়ে অনেক যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয় না। এখন দেখা যাক। পানি কমলে চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় আবার একটা সাঁকো তৈরি করা হবে।
সাঁকো ভেঙে যাওয়ায় জনসাধারণের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নাফ বলেন, 'ব্রিজটির ডিজাইন এর কাজ প্রক্রিয়াধীন। আশাকরি তা দ্রুত অনুমোদন এবং টেন্ডার হবে।'