কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উপর দিয়ে বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। গত তিনদিন ধরে তাপমাত্রা ৮ডিগ্রির আশেপাশে অবস্থান করছে। আজ মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (চ:দা:) ও ওয়ারলেস অপারেটর তুহিন মিয়া জানান, দিন ও রাতের তাপমাত্রা একরকম থাকায় বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। গত তিনদিনে তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৬, ৮ দশমিক ৮ এবং মঙ্গলবার ৮ডিগ্রি হিমাংকে অবস্থান করছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুর রহমান সরদার জানান, তাপমাত্রা নেমে গেলেও চলতি মাসে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে শীতজনিত কোন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) হাসপাতালে ৩৪০ রোগী ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ডায়রিয়া আইসেলেসে ৩৫জন এবং শিশু ওয়ার্ডে ৭৭জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ২২৮জন।
তীব্র শীতের কারণে বিপাকে পরেছে শিশু ও বয়স্করা। কুড়িগ্রাম শহরের খলিলগঞ্জ বাজারের ঔষধ ব্যবসায়ী প্রিন্স জানান, শীতজনিত কারণে ডায়েরিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ¦র ও সর্দির প্রকোপে বৃদ্ধি পেয়েছে রোগীর সংখ্যা।
উলিপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের গোড়াই রঘুরায় গ্রামের কৃষক বদিয়ত ও মোস্তাফিজার জানান, কুয়াশার কারণে বীজতলায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি সড়াতে না পারায় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এই গ্রামের ছামাদ, হোসেন, লালভানু, জোসনা জানান, হামার গ্রামোত কাঁইয়ো কম্বল দিবের আসে না। হামরা একবারো একটা কম্বল পাইলং না।
এদিকে সকালে প্রচন্ড কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ার কারণে চরম ভোগান্তিতে পরেছে খেটে খাওয়া মানুষ। পরিবারের প্রয়োজনে তারা বাইরে বের হলেও তীব্র ঠান্ডা সহ্য করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের অটোচালক ছামসুল জানান, বাহে গাড়ী চালা কঠিন হয়া দাঁড়াইছে। শীতোত হাত-পা কোকড়া নাগি গেইছে, নাকে মুখ টনটন করে।
এদিকে শীতের কারণে জেলার ২৭৬টি দ্বীপচরের প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক’ গ্রামের ৫লক্ষাধিক দরিদ্র মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে দিন পার করছেন। শ্রমজীবী পবিারগুলো শীতের প্রভাবে কাজে বের হতে না পারায় ভীষণ কষ্টে কাটছে তাদের দিন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, শীতার্ত মানুষের সহায়তায় সদাশয় সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ৩৮ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে আমরা আরো ২৫ হাজার কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। দরিদ্র মানুষের যদি খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা লাগে সেগুলো আমরা দিয়ে দিচ্ছি।