আজাদুল ইসলাম আজাদ, পীরগঞ্জ রংপুর:
রংপুরের পীরগঞ্জে গোখাদ্য সংকট পাল্লা পাথরে ওজনের মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে খড়। চড়া দামে কিনতে হচ্ছে খড় দুশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিগন।
দূরদূরান্তে থেকে গোখাদ্য খড় সংগ্রহ করে উপজেলার ১ টি পৌরসভা এবং ১৫ টি ইউনিয়নের গ্রাম এবং বাজারে বিক্রি করা হলেও ক্রেতাদের কোন অভিযোগ নেই। দিনাজপুর জেলা থেকে বড় পাইকাররা গাড়ি যোগে পীরগঞ্জের খুচরা পাইকারদের কাছে পৌঁছে দেয়। আর ছোট ছোট খুচরা বিক্রেতারা হাটবাজার এবং গ্রামে গ্রামে বিক্রি করছে। এখানে হাওয়াই ভাবে বিক্রি হলেও এখন মন হিসাবে বিক্রি করা হচ্ছে, কমবেশি নিয়ে কারো মনে সন্দেহ আর থাকলো না।
জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকার খড় ব্যবসায়ী মোকছেদুল ইসলাম জানান, দিনাজপুর এলাকার বড় বড় খড় ব্যাবসায়ী তারা ৫৫০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করে। আমরা এলাকায় প্রতি মন ৬২০ টাকা দরে বিক্রি করে থাকি। এ ব্যবসায় পালা বরাদ্দ লাভা নেই। এলাকায় মানুষের চাহিদার উপর নির্ভর করে দূর থেকে খড় বা (পল) কিনে নিয়ে আসি। বিশেষ করে গোখাদ্য খড়ের কাজ বা ব্যবসা অনেকেই করতে চায় না। কারন এখানে অনেক শ্রমের প্রয়োজন আছে, এছাড়াও পলের কাজ করলে গা ঘেমে যায়। যে কারনে এ ব্যবসায় খরচ বেশি লাভ কম। প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ মন (পল) বা খড় খুচরা বিক্রি করে থাকি।
ধান বাড়ি থেকে ৮ বিঘা জমির পল কিনেছিলাম বর্ষার কারনে ১ ছটাক পলও ঘরে আনতে পারিনি। এখন পল কিনে গরু কে খাওয়াতে হচ্ছে বলে জানান জাহাঙ্গীরাবাদ এলাকার মনির হোসেন।
কৃষি বিভাগের লোকজন বলছেন, উপজেলার প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চাষ করা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গোখাদ্য খড় সংকট হতো না। বৃষ্টি কে উপেক্ষা করে বোর ধান কাটা মাইরাই করা হয়েছে। অধিকাংশ ধান চাষি হারভেস্টার বা মেশিন দিয়ে কাটা মাইরায়ের কাজ করেছে। বৃষ্টির পানিতে অনেকের খড় পচে বা মাটিতে মিশে গেছে। সেই কারনে গোখাদ্য খড়ের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে।
এ অঞ্চলে সকল ফসলের পাশাপাশি ধানের চাষাবাদ অধিক হারে হয়ে থাকে। কাটা মারা সময় বৃষ্টি বাদল চাষিদের পিছু ছাড়েনি। আর বৃষ্টির পানি কৃষকদের (পল) বা খড় মজুদের সুযোগ দেয়নি। আমার ২০ বিঘা মাটির ধান খাড়ার অভাবে মেশিন দিয়ে কেটে কেটে নেই। অই সময় ধান নিয়ে মহা বিপদে খড়ের হিসাব রাখতে পারিনি। জমির সব খড় পানিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কোন কোন কৃষকের অল্প আবাদ ছিল তারা কমে বেশি খড় মজুদ বা ঘরে উঠাতে পারছে। এখন আমার নিজের গরুর খাদ্য নিয়েই বড় বিপদে আছি।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধিত ৪৫ সহ ১৩৫০ টি গাভীর খামার রয়েছে। খামারিদের সংখ্যা ৩ হাজার ৫ শত ২৩ টি, সবমিলিয়ে গরুর সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ১২ হাজার। প্রাণী সম্পদ অফিসার ফজলুল কবির জানান, বোরোধান ঘরে উঠার আগে বর্ষা হয়েছিল। পানিতে খড় পচে নষ্ট হয়ে গেছ। যে কারনে অনেকের খড়ের কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। এ উপজেলায় ৩/৪ প্রকারের ঘাষ রয়েছে আর এই ঘাষের চাষ প্রায় খামারিদের রয়েছে। খড়ের কিছুটা চাহিদা কমিয়েছে কাচা ঘাষ।