কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের কাউনিয়ায় যৌতুকের দাবীতে গৃহবঁধূ আয়শা আক্তার সুখিকে হত্যার ঘটনায় মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার হারাগাছ পৌর শহরের মেনাজবাজার গোল্ডানঘাট ব্রিজের পাশে হারাগাছ-বকুলতলা সড়কে সর্বস্তরের জনসাধারনের ব্যানারে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এবং এলাকাবাসী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত করেন।
মানববন্ধনে নিহত আয়শা আক্তার সুখির পিতা আবুল হোসেন বলেন, তার মেয়েকে হত্যার পর লাশ ঘরের মেঝেতে ফেলে রাখে জুয়েল ও তার পবিরারের সদস্যরা। অথচ তারা মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্ররোচনা চালায় তার মেয়ে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তার মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। যৌতুকের দাবী পুরন করতে না পারায় তার মেয়েকে জামাই জুয়েল ও তার পরিবারের সদস্যরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করছে না।
মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন, পৌর ওয়ার্ড বিএনপির সম্পাদক নয়ন মনি, শিক্ষার্থী তানজিনা বেগম, হামিদুল ইসলাম, আর মারজান, শাহারিয়া হোসেন, সাজিদ ও শাবানা বেগম প্রমুখ।
বক্তারা সুখিকে হত্যার ঘটনায় মামলায় আসামীদের গ্রেপ্তার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। আর যেন কোন নারী যৌতুকের দাবীতে হত্যার শিকার না হয়। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার দ্রত বিচার করে দৃষ্টান্তমুূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হারাগাছ পৌর শহরের ঠাকুরদাশ গ্রামে শ্বশুড়বাড়ী থেকে স্ত্রী আয়শা আক্তার সুখিকে নিজপাড়া গ্রামে নিজবাড়ীতে নিয়ে যায় স্বামী জুয়েল। ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে স্বামীর বসতবাড়ীর ঘরের মেঝে থেকে গৃহবঁধূ আয়শা আক্তার সুখির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর পরেই স্বামী জুয়েল ও তার পিতা-মাতাসহ অন্য সদস্যরা গা ঢাকা দেয়। এ ব্যাপারে সুখির পিতা বাদী হয়ে জুয়েলকে প্রধান আসামী করে পাঁচজনের নামে যৌতুকের জন্য হত্যা ও সহায়তার ধারায় মামলা দায়ের করেন। তবে এঘটনায় কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। নিহত আয়শা আক্তার সুখি কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর শহরের ঠাকুরদাশ গ্রামে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আবুল হোসেনের মেয়ে। প্রায় এক বছর আগে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের নিজপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে জুয়েলের সঙ্গে বিয়ে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কাউনিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিবুর রহমান বলেন, বাদীর অভিযোগ সত্য নয়। ঘটনার পর থেকে আসামীরা পলাতক রয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তার মাধমে খুব দ্রুতই আসামীদের আইনের আওতায় আনা হবে।