নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুর সদর খাদ্য গুদামে (এলএসডি) থেকে প্রায় কোটি টাকার চাল ও গম আত্মসাতের মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে দুদক। তদন্ত করছেন রংপুরের দুদক সমন্বিত কার্যালয়ের নিযুক্ত তদন্ত কর্মকর্তা ডেপুটি সহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা। তিনি এই মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছে।
‘আমাদের প্রতিদিন’ পত্রিকায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এই দুর্নীতির সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হয়। এর পর দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয় অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানকালে দুর্নীতির ঘটনার সত্যতা খুঁজে পায় দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হুসাইন শরীফ।
এরপর তিনি নিজে বাদি হয়ে চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা( নম্বর-৪) দায়ের করেন। মামলায় আসামি করা হয় রংপুর সদর ওসি,এলএসডিÑ(ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা) কানিজ ফাতেমাসহ নিরাপত্তা কর্মী চঞ্চল কুমার সিংহ ও লেবার সর্দার রবিউল ইসলামকে।
প্রাথমিক পর্যায়ে মামলাটির তদন্ত শুরু করেন মামলার বাদি দুদকের রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ হুসাইন শরীফ। বদলিজনিত কারনে তিনি অনত্র চলে যাওয়ায় বর্তমান মামলাটি তদন্ত করছেন দুদক রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের ডেপুটি সহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা। তিনি বলেন, মামলাটির প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তসহ নথিপত্র সংগ্রহ করেছেন। মামলাটি এখন তিনি নিজে তদন্ত করছেন। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য রংপুর সদর খাদ্যগুদাম ২০২৪ সালে (এলএসডি) থেকে ১৫০ টন চাল, ৩০০ কেজি গম আত্মসাত করা হয়। যার বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা। এর সঙ্গে সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, এলএসডি) কানিজ ফাতেমা, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ অধস্তন ৮ স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি জড়িত রয়েছেন বলে এমন যোগসূত্র পাওয়া যায়।
এ নিয়ে ‘আমাদের প্রতিদিন’ পত্রিকায় খবর প্রকাশের পরের দিন তড়িঘড়ি করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ডিসি ফুড)। কিন্তু দুদকের এই মামলায় তাদের আসামি করা হয়নি কেন এনিয়ে দুদকের কোন কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।
সে সময়ে আমাদের প্রতিদিনের অনুসন্ধান যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে ১৫০ টন চাল, ৫০০ কেজি গম ও চটের ৯ হাজার ৫০০ খালি বস্তা আত্মসাতের ঘটনাও জানাজানি হয়। পরে ডিসি ফুড অন্তরা মল্লিক তড়িঘড়ি করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তার আগেই আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুল আলম প্রমোশন নিয়ে খাদ্য বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক হিসাবে ঢাকায় চলে যান।
স্থানীয় কিছু চালকল মালিকের মাধ্যমে সদর খাদ্যগুদাম থেকে ওই বিপুল পরিমাণ চালসহ অন্য খাদ্যদ্রব্য এক বছর ধরে ক্রমাগত আত্মসাৎ করা হয়েছে। প্রতি মাসে ১৫ দিন অন্তর খাদ্যগুদাম মজুত পরিস্থিতি সম্পর্কে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের (ডিসি ফুড) দপ্তরে জানানোর দায়িত্বে থাকেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক। এরপরও কি করে এই বিপুল পরিমান টাকার খাদ্যশস্য আত্মসাত করা হলো তা রহস্যজনক। রংপুর সাবেক রংপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অন্তনরা মল্লিক বর্তমান তিনি পঞ্চগড় জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক হিসবে কর্মরত আছেন। এ নিয়ে তিনি বলেন বিষয়টি এখন দুদকের মামলায় তদন্তাধীন তাই এ নিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।