বেরোবি সংলগ্ন ঢাকা–কুড়িগ্রাম মহাসড়কে নেই ট্রাফিক শৃঙ্খলা

2025-09-25 15:12:34

বেরোবি প্রতিনিধি:   

ঢাকা–কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশেই উত্তরবঙ্গের বাতিঘর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। রংপুর নগরীর প্রবেশমুখে অবস্থিত এ অঞ্চলে বসবাস করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী। শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নিতে প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ এই পথে যাতায়াত করেন। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে নেই কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা।

গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে ক্লাসে যোগ দিতে সড়ক পার হওয়ার সময় এক নারী শিক্ষার্থী বেপরোয়া পিকআপ ভ্যানে আহত হন। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে নিরাপদ সড়কের দাবি জানায়। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গতিরোধক সংস্কার, ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দেন।

এর আগেও একই সড়কে ঘটেছে আরও ভয়াবহ দুর্ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ পার্কের মোড়ে (বর্তমানে আবু সাঈদ চত্ত্বর) এক মোটরসাইকেল আরোহী ট্রাকচাপায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ এ মোড়ে বারবার দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। কিছু নিম্নমানের গতিরোধক দিয়েই দায় সারছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন,“বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নতুন করে কয়েকটি স্পিডব্রেকার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধান ফটকের সামনে সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে। রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে বিভাগে শহীদ আবু সাঈদ গেটের সামনে একটি ফুটওভার ব্রিজের প্রস্তাব পাঠানো হবে। আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”এ বিষয়ে বেরোবির নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) কামলেশ চন্দ্র সরকার বলেন,

“ফুটওভার ব্রিজ একটি বড় প্রকল্প। তবে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা বিষয়টি আমলে নিয়েছি। পুরোনো গতিরোধকগুলো সংস্কার এবং কিছু নতুন গতিরোধক সংযোজন করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ অবশ্যই প্রয়োজন, যেহেতু এখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চলাচল করেন। আমাদের পক্ষ থেকে নকশা ও নথিপত্র কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেয়া হয়েছে। সার্বিক বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নিজে তত্ত্বাবধান করছেন।”

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার বলেন,

“বর্তমানে সড়কের যে অবস্থা, তাতে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা কঠিন। জনসচেতনতার অভাব ও চালকদের বেপরোয়া আচরণ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক সময় হাইওয়েতে স্পিডব্রেকার দুর্ঘটনা কমানোর বদলে আরও ঝুঁকি তৈরি করে। আমাদের ট্রাফিক বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে। তারপরও সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যাতে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সড়ক শৃঙ্খলা তদারকি করে।”

ঢাকা–কুড়িগ্রাম মহাসড়কের বেরোবি সংলগ্ন অংশে কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগই কেবল শিক্ষার্থীসহ হাজারো পথচারীর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পারে।