‎রংপুর বিভাগে লাগামহীন অটোরিকশা, দুর্ঘটনায় বাড়ছে প্রাণহানি

2025-09-25 15:14:24

নিজস্ব প্রতিবেদক:

একসময় যানজটমুক্ত ও শান্ত পরিবেশের জন্য পরিচিত রংপুর বিভাগ এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দাপটে ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ছুটে চলা এই তিন চাকার যান একদিকে যেমন দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে বাড়াচ্ছে যানজট ও বিদ্যুতের ওপর চাপ। শুধু রংপুর শহর নয়, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড়সহ বিভাগীয় জেলার প্রায় সব সড়ক ও অলিগলিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ইজিবাইক, চার্জাররিকশা ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চলাচল করছে। এদের অধিকাংশই রেজিস্ট্রেশনবিহীন, আর চালকরা অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন।

অটোরিকশার কারণে শুধু যানজটই নয়, বেড়েছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। গাইবান্ধায় নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত মিলে প্রায় ৩০ হাজার ইজিবাইক চলাচল করছে। কুড়িগ্রামে এই সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। ঠাকুরগাঁও শহরে প্রতিদিন রাস্তায় নামে ১০ হাজারেরও বেশি অটোরিকশা, যার মধ্যে অনুমোদিত মাত্র সাড়ে তিন হাজার। পঞ্চগড়ে নিবন্ধিত সংখ্যা দেড় হাজার হলেও শহরে প্রতিদিন ঢুকছে আরও কয়েক হাজার রিকশা।এসব অটোরিকশার চালকদের অধিকাংশই অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন। যত্রতত্র পার্কিং ও হঠাৎ যাত্রী ওঠানো-নামানোর কারণে প্রতিদিন ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গাইবান্ধায় গত এক বছরে শতাধিক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ২৫ জনের, আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পঞ্চগড়ে এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ২৮ জনের।

এছাড়া, বিপুল সংখ্যক ইজিবাইক চার্জ দেওয়ায় বিদ্যুতের ওপর তৈরি হচ্ছে বাড়তি চাপ। প্রতিটি ইজিবাইক চার্জে লাগে ১০–১২ ইউনিট বিদ্যুৎ। কুড়িগ্রামে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় প্রায়ই লোডশেডিং দেখা দিচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় শহরে যানজট বেড়েই চলেছে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি টিএম মনোয়ার হোসেন বলেন, “অটোরিকশার লাগাম টানতে না পারলে দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলা আরও বাড়বে। এখনই সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।” নিবন্ধনবিহীন অটোরিকশা বন্ধ, নির্দিষ্ট রুট ও স্ট্যান্ড নির্ধারণ এবং অদক্ষ চালক নিয়ন্ত্রণের দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ।