সুন্দরগঞ্জে অসুস্থ গরু জবাইয়ের পর অজানা রোগে আক্রান্ত ১১ জন

2025-10-03 23:42:22

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অসুস্থ গরু জবাইয়ের পর মাংস কাটার কাজে নিয়োজিত অন্তত ১১ জন রহস্যজনক রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।

তাদের শরীরে ফোড়া, ফোসকা, ঘা ও জ্বর দেখা দেওয়ায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সচেতন মহলের ধারণা, এটি অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ হতে পারে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৪ নং বেলকা ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড কিশামত সদর গ্রামে গত শনিবার মাহাবুর রহমান নামের এক ব্যক্তির গরু অসুস্থ হলে জবাই করা হয়। এতে গরু জবাই করা মৌলভীসহ মাংস কাটার কাজে নিয়োজিত ১১ ব্যক্তি সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণিরতে পড়া এক শিক্ষার্থীও রয়েছে।

অসুস্থ ব্যক্তিরা হলেন, ওই এলাকার মৃত নইম আলীর ছেলে মোজাফফর মিয়া(৫০), মৃত আজিজল হকের ছেলে শফিকুল ইসলাম(৩৭), মাহাবুর রহমানের ছেলে খতিব উদ্দিন(৩০), হোসেন আলীর ছেলে মারুফ মিয়া(১৩), শফিকুল ইসলামের ছেলে আব্দুল কুদ্দুস(১৪), হোসেন আলীর ছেলে নুরুন্নবী নিয়া(১৩), মজিবুর রহমান মন্টু মেম্বারের ছেলে হাসান মিয়া(১৪), মৃত মোকসেদুলের ছেলে গোলজার রহমান(২৫) ও মিঠু মিয়া(১৬), মৃত খমির উদ্দিনের ছেলে মোজাহার আলী(৬০), মোজাহার আলীর ছেলে ফরিদুল ইসলাম(২৩)।

এছাড়াও ওই ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা ও জহুরুলের মোর নামক স্থানে একই রোগে আক্রান্ত হয়ে আরো ৮ জন অসুস্থ বলে জানা গেছে।

আক্রান্ত ব্যক্তি মারুফ মিয়া বলেন, আমরা গরু জবাইয়ের পর মাংস কাটতে যাই। এরপর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোড়া ওঠে, দুই হাতে ফোসকা পড়ে ও প্রচণ্ড জ্বর হয়।

 

আরেক আক্রান্ত ব্যক্তি গোলজার রহমান জানান, অসুস্থ গরুটি জবাই করার পরে আমরা সেখানে মাংস কাটি। কাটার পরের দিন থেকে শুরু হয় প্রচন্ড জ্বর ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোসকার মতো পড়ে ঘা হয়। শরীরে প্রচন্ড যন্ত্রণা সহ্য করার মতো না।

 

মৌলভী মোজাফফর মিয়া জানান, আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও গরুর মালিকের আকুতিতে অসুস্থ গরুটিকে জবাই করি। জবাই করার সময় গরুটির শরীরের জ্বর ছিল। অসুস্থ গরুটি জবাই করার সময় রক্তের ফোটা আমার চোখে পড়ে। তখন আমি কিছু বুঝতে পারি না পরবর্তীতে আমার সেই রক্তের ফোটার জায়গায় ফোসকা পড়ে।

 

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার দে বলেন, স্থানীয়দের কাছে জবাইকৃত গরুটির লক্ষণ ও বর্ণনা শুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় গরুটি এনথ্রাক (তড়কা) রোগে আক্রান্ত ছিল। 

আমি গতকাল খবর পেয়ে আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছিল এবং ওই এলাকায় যত গরু আছে ভ্যাকসিন কমপ্লিট করানো হয়েছে। ও ফ্রিজের মাংস এবং গরুর চামড়া মাটি নিচে তিন ফুট গর্ত করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং ওই এলাকায় উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

এই ঘটনার দায়ভার নেবে কে? এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম উদ্বেগ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।