দরিদ্র মানুষের ভাগ্য নিয়ে সমবায় সমিতির তালবাহানা : কুড়িগ্রামে প্রতারিতদের আর্তনাদ!

2025-10-04 22:37:16

কুড়িগ্রাম ও চিলমারী প্রতিনিধি :

প্রতারিত ষাটোর্ধ ছকিনা বেগম কেঁদে কেটে বললেন, বাবা মুই ভিক্ষা করি খাং। মাটি কাটার কাম করি সারা জীবনের জমা সাড়ে ৬লাখ টেকা সমিতিত থুছং। এলা শোনোং সমিতিত টেকা নাই। মুইতো এ্যালা পাগোল হয়া যাম! কথাগুলো বলে উদ্ভ্রান্তের মতো আচরণ করছেন তিনি।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সহস্রাধিক সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিজেদের গচ্ছিত অর্থ ফেরৎ না পেয়ে প্রতারিতরা শনিবার দুপুরে জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

জানা গেছে, সংগঠনটি ২০০৭ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ওই বছরেই উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পায়। সমিতিতে টাকা রাখলে উচ্চ হারে লভ্যাংশ প্রদানের লোভ দেখিয়ে একটি চক্র প্রায় ৩ হাজার সদস্যদের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। চলতি বছর থেকে তাদের কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধ করে দেয়া হয়। বর্তমানে সদস্যরা টাকা ফেরত চাইতে গেলে টালবাহানা করছে সমিতির কর্তৃপক্ষ।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী খড়খড়িয়া এলাকার রিপন মিয়া ২লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, থানাহাট ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকার জয়ন্ত রায় জয়ন ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা, সরকারপাড়া এলাকার এরশাদুল হক ৮০ হাজার টাকা, জোড়গাছ সাত ঘড়িপাড়া এলাকার সুফিয়া বেওয়া ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা, একই এলাকার জেলেখা বেওয়া ১ লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা, কসভান বেওয়া ৬০ হাজার টাকা, মিম আক্তার ৩৬হাজার ৫০০টাকাসহ প্রায় ৩ হাজার গ্রাহকের নিকট থেকে এভাবে প্রায় ৪ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা জানা গেছে।

দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির সম্পাদক নুর আলম জানান, সমিতির পরিচালক আনিসুর রহমান আনিস এবং মিল্টন মিয়া ১৭জন কর্মচারীর অর্থ উত্তোলনের  কাগজপত্র তাদের জিম্মায় নেয়ায় আমরা হিসাব দিতে পারছি না। তবে গত এক সপ্তাহ আগে সাড়ে ৩৩ শতাংশ জমি ৯৫ লক্ষ টাকা পরিশোধের জন্য সাতটি দলিল মূলে দেয়া হয়েছে। বাকি গ্রাহকদের পরিশোধ করার মতো অর্থ সমিতিতে নেই।

সমিতিরপরিচালক (ঋণ) আনিসুর রহমান আনিস এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি।