গঙ্গাচড়ায় ৪ হাজার ৫শত পরিবার পানিবন্দি

2025-10-06 21:27:12

তিস্তা নদীতে আবারো ভয়াবহ বন্যা

নির্মল রায়:

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারো তিস্তায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রবল স্রোতে প্লাবিত হচ্ছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত। ভেসে গেছে চাষিদের পুকুরের মাছ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৪ হাজার ৫ শত পরিবারের ঘর-বাড়ী।

সোমবার  (৬অক্টোবর) দুপুর ১২টায় গঙ্গাচড়ার উজানে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৫২.৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা সকাল ৬ টায় বিপদ সীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এতে উপজেলার গঙ্গাচড়া, লক্ষিটারী, গজঘণ্টা, মর্নেয়া, নোহালী, আলমবিদিতর, কোলকোন্দ ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্ত্তী নিম্নাঞ্চলে নদীর পানি ঢুকে পড়েছে। হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে অনেকের ঘরবাড়ি।

গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান দুলু জানান, তার ইউনিয়নের গান্নার পাড়, বোল্লার পাড়, ধামুর এলাকায় প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

লক্ষিটারী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হাদী জানান, ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, মধ্য ইচলি, পূর্ব ইচলি, জয়রাম ওঝা, শংকরদহ ও চল্লিশ সাল এলাকার প্রায় ১২০০পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

গজঘন্টা ইউপি চেয়ারম্যান (প্যানেল) বকুল মিয়া বলেন ইউনিয়নের কালির চর, চর ছালাপাক ও চর রাজবল্লভ এলাকার প্রায় ৭০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান (প্যানেল) শরিফুল ইসলাম জানান, ইউনিয়নের বিনবিনা, শখের বাজার, খলাইর চর, মটুকপুর, আবুলিয়া, চিলাখাল এলাকার প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

মর্নেয়া ইউপি প্রশাসক মাহমুদুর রহমান জানান, ইউনিয়নের চর মর্নেয়া, নরসিংহ, রামদেব, কামদেব, নিলারপাড়া এলাকার প্রায় ৪০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

নোহালী ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী জানান, ইউনিয়নের চর নোহালী, চর বাগডহরা, চর বৈরাতি, মিনার বাজার, ব্রিফ বাজার ও আশ্রয়ন বাজার এলাকার নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৮০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

আলমবিদিতর ইউপি প্রশাসক আবতাবুজ্জামান জানান, ইউনিয়নের পাইকান হাজীপাড়া ও ব্যাঙপাড়া এলাকার প্রায় ১০০ পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে।

এসব এলাকায় ফসলি জমি, বাড়িঘর, মাছ চাষের পুকুর, রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে।

গঙ্গাচড়া উপজলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সজীবুল করিম জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মাঝে সরকারী সহায়তা প্রদান করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় তিস্তার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।